বুধবার, ৯ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রচন্ড খরতাপ, বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত কালিয়াকৈরের জনজীবন। সরকারের হিসাবমতে দেশে বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি না থাকলেও ভয়াবহ লোডশেডিং চলছে এ উপজেলায়। অথচ বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকায় কালিয়াকৈরকে গত বছর শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা ঘোষণা করা হয়। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈরে বিদ্যুতের চাহিদা ১৫০ মেগাওয়াট। বরাদ্দ অনুযায়ী প্রায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎই সরবরাহ হচ্ছে। সকাল হতে না হতেই সূর্যের তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সময় অসময়ে দেখা দিচ্ছে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি। বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে দুঃসহ গরমে কাটাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলার জনজীবন। অন্যদিকে রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় এলাকায় গরু ও অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের উৎপাদন কমে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট অনেকটাই স্বাভাবিক হলেও সামান্য বৃষ্টিতেও বিদ্যুৎ থাকে না। এটিও অনেকের কাছে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এমন অবস্থা শুরু হয়েছে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর কালিয়াকৈর জোনাল অফিসসহ বিভিন্ন অফিসের আওতাধীন এলাকায়। অভিযোগ উঠেছে, কালিয়াকৈর জোনাল অফিসসহ বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তার উদাসীনতায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি। এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। জ্যৈষ্ঠের শেষের দিক। শিল্পাঞ্চল খ্যাত কালিয়াকৈর উপজেলায় বিদ্যুৎ নিয়ে চলছে নানান নাটকীয়তা। কালিয়াকৈর জোনাল অফিসের পক্ষ থেকে বলা হয়, বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলে লাইন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বৃষ্টিপাতের শুরুতেই শুরু হয়েছে বিদ্যুতের ভেলকিবাজি। আকাশে মেঘ জমলেই চলে যায় বিদ্যুৎ।

বিষয়টি কালিয়াকৈরবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। এদিকে তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে অফিস-আদালতেও স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। কলকারখানায় ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। দিনে কমপক্ষে তিন থেকে চারবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। আবার কোনো কোনো এলাকায় মাইকিং করে সকাল থেকে সারা দিন বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। দিনে চার থেকে ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। উপজেলার কালিয়াকৈর বাজার, সফিপুর, মৌচাক, ভান্নারা, চান্দরা, সূত্রাপুর, ফুলবাড়িয়া, চাপাইর, আটাবহ, বোয়ালী, ঢালজোড়া, জালশুকা, কাঞ্চনপুর, বড়ইবাড়ী, সাহেবাবাদে বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। ২৪ ঘণ্টায় ৮-১০ বার লোডশেডিং চলে এসব এলাকায়। উপজেলার হিজলহাটি ও জালশুকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নাজমুল আলম ও আফরোজা বেগম জানান, এমনিতেই স্কুল-কলেজ বন্ধ এর মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় লেখাপড়ার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। উত্তর বক্তারপুরের নূরুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে আমার গরুগুলো চুরি হয়েছে। পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১-এর কালিয়াকৈর জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী সোলায়মান হোসেন জানান, সরবরাহ লাইন ও গ্রিডে সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। এ ছাড়া বর্তমানে কালিয়াকৈরে কোনো ধরনের লোডশেডিং নেই। মৌচাক জোনাল অফিসের জি এম প্রকৌশলী মো. ফাকরুল ইসলাম বলেন, ‘যখন বিদ্যুতের সমস্যা হয় তখন ফোন দিয়েন ব্যবস্থা নেব।’

সর্বশেষ খবর