রবিবার, ১১ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

মেঘ দেখলেই আতঙ্ক ছড়ায় নালিতাবাড়ীর ৫০ গ্রামে

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

মেঘ দেখলেই আতঙ্ক ছড়ায় নালিতাবাড়ীর ৫০ গ্রামে

পাহাড়ে মেঘ দেখলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গারো পাহাড়ের গা-ঘেঁষা নালিতাবাড়ীর ৫০ গ্রামের মানুষের মধ্যে। কারণ বৃষ্টি এলেই ভয়ানক রূপ ধারণ করে পাহাড়ি নদী ভোগাই ও চেল্লাখালি। তখন পানির তোড়ে একাকার হয়ে যায় সাত ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। এরই মধ্যে গত কয়েকদিনের বর্ষণে ঢল নেমেছে ভোগাই নদীতে। পানির তোড়ে প্রায় ২০০ মিটার তীর রক্ষা বাঁধ ভেঙেছে পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর গড়কান্দা ও নিজপাড়া মহল্লায়। এ এলাকার ভেসে গেছে তিনটি বসতঘর ও শতাধিক পরিবারের হাঁস-মুরগি। ঘরে পানি ঢোকায় নষ্ট হয়েছে অনেকের আসবাবপত্র। কাঁদা-পানিতে একাকার হয়ে ঘরে স্বজনদের কষ্টে দিন কাটছে বহু পরিবারের। বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে বাঘবেড়, নয়াবিল, কলসপাড়, যোগানিয়া, মরিচপুরান ও রাজনগর ইউনিয়নের ৫০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সব এলাকার ১১০০ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। নিমজ্জিত হয়েছে ২০০ হেক্টর আমনের বীজতলা ও ২৫০ হেক্টর আউশ ধানের খেত। নষ্ট হয়েছে সবজি খেত। নালিতাবাড়ী পৌর সভার উত্তর গড়কান্দা মহল্লার খোদেজা খাতুনের (৫০) ৩৫ শতক ভিটার মধ্যে ১০ বছরে ৩৪ শতকই ভোগাই নদীর পেটে চলে গেছে। বাকিটুকু বিলীন হতে পারে যে কোনো সময়। পাহাড়ে মেঘ দেখলেই শুধু কাঁদছেন খোদেজার পরিবারের সদস্যরা। তাদের প্রার্থনা আর যেন বৃষ্টি না হয়। আর যেন নদীতে ঢল না নামে। খোদেজাদের মতো একই অবস্থা পাহাড়ি এলাকার শত শত পরিবারের। প্রায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে তাদের আবাদি জমি, বাড়িঘর যায় নদীর পেটে। কিন্তু ভাঙন রোধে স্থায়ী কোনো সমাধান হয় না। এলাকাবাসী জানান, ভোগাই নদীর তীররক্ষা বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তারা আতঙ্কে আছেন। এখনো প্রথম দফার পাহাড়ি ঢলের ধকল সামলে উঠতে পারেননি তারা। আবার ঢল এলে ফসলসহ সব শেষ হয়ে যাবে। ভোগাই নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক, ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র।

সর্বশেষ খবর