শনিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

করের বোঝা বাড়লেও বাড়েনি নাগরিক সুবিধা

করোনাকালীন কোনো নোটিস ছাড়াই পৌর কর বেড়েছে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

বিভিন্ন অজুহাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় করের বোঝা ও ফি বারানো হলেও তেমন একটা বাড়েনি নাগরিক সুবিধা। অন্যদিকে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট ভাঙাচোরাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ঘুরপাক খাচ্ছে পুরো পৌরসভা এলাকা। এবার করোনা সংকট চলাকালে কোনোরকম গণশুনানি বা প্রচারণা ছাড়াই প্রতিটি বাড়ির পৌরকর কয়েক শ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান আয়তন ২৪ দশমিক ৬০ বর্গকিলোমিটার। ২ লাখ ৬০ হাজার জনসংখ্যার ‘ক’ শ্রেণির এ পৌরসভায় ওয়ার্ড সংখ্যা ১৫টি। হোল্ডিংধারীর সংখ্যা ৩৮ হাজার ১৬৫টি। কিন্তু ২ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড এবং ৩, ৪ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আংশিক অংশ ছাড়া বাকি ওয়ার্ডে আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া লাগেনি। প্রতিনিয়ত হোল্ডিংধারীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে পৌর কর, বিভিন্ন ফিসহ পানির বিল বাড়ানো হলেও নেই তেমন নাগরিক সুবিধা। নির্মিত ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে মশার উপদ্রব। অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠছে বিভিন্ন স্থাপনা। তারপরও সেসব স্থাপনার কোনো জায়গা ছাড়া হচ্ছে না আর সড়কের ওপর রাখা হচ্ছে নির্মাণসামগ্রী। অন্যদিকে অপরিকল্পিতভাবে পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে শাক-সবজির বাজার বসছে। সে এলাকায় কাঁচা বাজারের উন্নয়নে নেই কোনো পরিকল্পনা, পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এমনকি অধিকাংশ প্রধান প্রধান সড়কে সড়কবাতি না থাকায় সন্ধ্যার পরই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকছে। সেসব এলাকায় অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সচেতন মহল মনে করেন, বিরোধী পক্ষের মেয়র হওয়ায় এলাকার উন্নয়ন তেমন নেই। প্রতিনিয়তই এ পৌরসভাটি  কাক্সিক্ষত উন্নয়নে ব্যর্থ হচ্ছে। এদিকে করোনাকালীন কোনো ধরনের নোটিস ছাড়াই পৌর কর বৃদ্ধি করা হয়েছে। কারও বকেয়া দেখিয়ে ২০০ থেকে ১ হাজার, কারও এক লাফে ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার বাড়ানো হয়েছে।  শহরের গাবতলা মোড় এলাকার জাফরুল আলম জানান, আগে তাঁর হোল্ডিং ট্যাক্স ছিল ৭ হাজার ৮০০ টাকা। তা বাড়িয়ে ৫১ হাজার ৭০০ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া মসজদিপাড়া মহল্লার একজন জানান, তার বাড়ির পৌরকর ছিল ৪০০ টাকা, বর্তমানে বাড়িয়ে তা করা হয়েছে ২ হাজার ৬০০ টাকা। তিনি কখনো তার বাড়ি ভাড়াও দেননি অথচ তার বাড়ির পৌরকর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় নিম্নআয়ের ওই ব্যক্তির কর দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কোনোরকম ঘোষণা না দিয়ে পৌরকর অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সাবেক মেয়র মাওলানা আবদুল মতিন বলেন, কোনোরকম শুনানি ছাড়া পৌরকর বৃদ্ধির কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু বর্তমান মেয়র আইনকে তুচ্ছ করে কর বৃদ্ধি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা নিময় বহির্ভূত। এ সম্পর্কে পৌরসভার বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, যাদের অবকাঠামোগত পরিবর্তন হয়নি। তাদের ক্ষেত্রে কর বাড়ানো হয়নি। আর যেসব ভবনের অবকাঠামো পরিবর্তনের পাশাপাশি বাড়িভাড়া দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে অ্যাসেসমেন্ট করে কর নির্ধারণ করা হয়েছে।

 তিনি আরও জানান, নিয়ম মেনেই প্রতি পাঁচ বছর পরপর অ্যাসেসমেন্ট করা হয়। আগে যেসব হোল্ডিং গ্রহীতার টিনের ঘর ছিল, বর্তমানে সেখানে পাকা ইমারত করেছেন। তাদের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনেই করারোপ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইনের বরখেলাপ কিংবা গ্রাহকদের ওপর বাড়তি চাপ করা হয়নি।

সর্বশেষ খবর