শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ফসলি জমির মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষক

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

ফসলি জমির মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষক

ঢাকার ধামরাইয়ের ২ শতাধিক ইটভাটার খোরাক এখন কৃষকদের ফসলি জমির মাটি। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও কৃষকরা তাদের জমির মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। কৃষকরা চাপা ক্ষোভ নিয়ে বলছেন, প্রভাবশালীদের চক্র  ক্ষমতার দাপটে একটি চকের মধ্যে যে কোনো এক ব্যক্তির জমি কিনে সেখানে যন্ত্রদানব নামে ভেকু দিয়ে পুকুর খনন শুরু করে। এতে পাশের  জমিগুলো ভাঙতে থাকে। পরে বাধ্য হতে হয় ওই জমির মাটি বিক্রি করতে। কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, জমির পাশে পুকুর খনন করার বিষয়গুলো স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং উল্টো বিপদে পড়তে হচ্ছে তাদের। জানা গেছে, ধামরাইয়ের ১৬টি ইউনিয়নে প্রায় ২ শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। ওই ভাটার ইট তৈরির জন্য মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে। এতে ধামরাইয়ে ফসলের উৎপাদন কমছে। বিশেষ করে আমতা, সুতিপাড়া, সানোড়া, বালিয়া, সোমভাগ ইউনিয়নে কয়েকশ ভেকু লাগিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, আমতা ইউনিয়নের বড় নারায়ণপুর, নয়ারচরসহ কয়েকটি স্থানে সরিষা খেতে লাগানো হয়েছে ভেকু। আর তুলে নিচ্ছে জমির টপসয়েল। ক্ষণিকের জন্য মাটি বিক্রি করে কৃষকরা সামান্য টাকা পেলেও জমি থেকে চিরতরে হারাচ্ছে ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা। এঁরা বুঝেও মাটি বিক্রিতে বাধ্য তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কৃষক কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, বাপ-দাদারা জমিতে ফসল উৎপাদন করেছে। আর সেই জমির মাটি আমরা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। প্রতিবাদ করেও টিকতে পারছি না। ইট ভাটা আমাদের সর্বস্বান্ত করে ফেলছে। কয়েকজন মাটি ব্যবসায়ী জানান, স্থানীয় প্রশাসন ম্যানেজ করেই চলছে আমাদের ব্যবসা।

উালিয়া ইউনিয়নের কয়েকজন জানান, গত বছর ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার পর বাস্তা এলাকায় এ বছর কোনো ফসল উৎপাদন করতে পারেনি কৃষকরা। এখন ওই সব জমিতে গভীর পানি ও কচুরিপানা জমে আছে। তাই দ্রুত ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধের দাবি তাদের। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, কৃষকরা ফসলি জমির মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে এমন কথার সত্যতা স্বীকার করে জানান, প্রশাসন জোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ধামরাইয়ের সোনার জমির ফসল উৎপাদন শেষ করে ফেলবে ইটভাটায়।

সর্বশেষ খবর