শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

খরস্রোতা শাখা যমুনা এখন সমতলভূমি

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

খরস্রোতা শাখা যমুনা এখন সমতলভূমি

শাখা যমুনা নদীর বুকে ফসলের আবাদ

এক সময়ের দিনজপুর অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস ছিল খরস্রোতা শাখা যমুনা নদী। দীর্ঘদিন খনন না হওয়ায় নদীটি এখন সমতল ভ’মিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বছরের অধিকাংশ সময় পানি থাকে না শাখা যমুনায়। উজান থেকে আসা পলি জমতে জমতে তলদেশ ভরে গেছে। নদীর বুকে চাষ হচ্ছে ভুট্টা, ধানসহ বিভিন্ন ফসল। পানি পর্যাপ্ত না থাকায় কমে গেছে মাছ। নদীতে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। দূষণের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় দখল হয়ে যাচ্ছে নদী। শুকনো মওসুমে নদীর কোথাও কোথাও খাল-গর্ত-ডোবায় পানি দেখে বোঝা যায় এটি নদী। স্থানীয়রা জানান, এই নদীতে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা গেলে বর্ষাকালের পানি ধরে এ অঞ্চলের চাষিরা কৃষি কাজে এই পানি ব্যবহার করতে পারবেন। এতে মাছের উৎপাদনও বাড়বে বলে মনে করেন নদীর তীরবর্তী মানুষ। দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, এই শাখা যমুনা নদী দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার বিন্যাকুুড়ি নামক স্থানে ইছামতি নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে ফুলবাড়ী পৌরসভাসহ তিনটি ইউনিয়ন অতিক্রম করে পাশের বিরামপুর, হাকিমপুর উপজেলা হয়ে ভারতের পশ্চিম বাংলার দক্ষিণ দিনাজপুরের কিছু দূর প্রবাহিত হয়েছে। আবারও এটি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার ত্রিমোহনী যমুনা ও আত্রাই নদীতে মিলিত হয়েছে। এরমধ্যে ফুলবাড়ী উপজেলায় পড়েছে নদীর প্রায় ২৫ কিলোমিটার। নদীটির সর্বমোট দৈর্ঘ ৭০ কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ৮৫ মিটার। মুকুল সরকারসহ নদীর বাসিন্দারা বলেন, শাখা যমুনা নদী দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় পলি ধোয়া নেমে তলদেশ ভরে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর বন্যায় নদীর তলদেশে পলি জমে নাব্য হারাচ্ছে। শুধু তাই নয়, নদীর পাড় দখল করে অনেকে গড়ে তুলেছেন স্থাপনা। নদীতে ফেলা হচ্ছে পৌর শহরের ময়লা আবজর্না। পরিবেশ রক্ষায় নদীটি সংস্কার করে পানি ধরে রাখা হলে শুধু কৃষি কাজেই উপকার হবে তা না, দেশি মাছেরও অভাব দূর হবে। ফুলবাড়ী পৌর মেয়র মাহমুদ আলম লিটন বলেন, পৌরসভার আবর্জনা ফেলার নিজস্ব জায়গা না থাকায় নদীতে ফেলা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা করার। সেটি সম্ভব হলে নদীতে আর ময়লা ফেলতে হবেনা।

সর্বশেষ খবর