শনিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

এক যুগ ধরে হস্তান্তরের অপেক্ষায় ‘বাংলাদেশের মানচিত্র’

মেহেরপুর প্রতিনিধি

এক যুগ ধরে হস্তান্তরের অপেক্ষায় ‘বাংলাদেশের মানচিত্র’

মেহেরপুরের মুজিবনগর মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের বাংলাদেশের মানচিত্র নির্মাণকাজ শেষ হয়ে এক যুগ ধরে পড়ে আছে হস্তান্তরের অপেক্ষায়। এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে গণপূর্ত বিভাগ থেকে বার বার চিঠি পাঠিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি। মেহেরপুর গণপূর্ত বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০০৮ সালে ঢাকার জে বি বি লিমিটেড মুজিবনগরে বাংলাদেশের মানচিত্র ও গ্যালারি নির্মাণের কাজ শুরু করে। ২০১১ সালের জুন মাসে কাজটি শেষ হয়। এরপর এটি মুক্তিযুদ্ধবিষক মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই মানচিত্র হস্তান্তর হয়নি। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকার কারণে ভেঙে পড়েছে এর বেশ কিছু অবকাঠামো। চুরি হয়েছে ১৪২টি লাইট। অসমাপ্ত আছে বেশ কিছু কাজ। মেহেরপুর গণপূর্ত বিভাগ ইতোমধ্যে মানচিত্র ও গ্যালারি নির্মাণ সম্পন্ন করার জন্য প্রায় ৬ কোটি টাকার অ্যাস্টিমেট তৈরি করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সম্ভু রাম পাল বলেন, মানচিত্র ও গ্যালারি ছাড়াও মুজিবনগর অডিটোরিয়ামও হস্তান্তর হয়নি। এ বিষয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।  মুজিবনগর কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের পর সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো বাংলাদেশের মানচিত্র। মানচিত্রকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনাচিত্র, যুদ্ধকালে দেশের ৪টি পথ দিয়ে শরণার্থী গমন, হার্ডিং ব্রিজ ধ্বংস, শালদহ নদীতে যুদ্ধ, শুভপুর ব্রিজের সম্মুখযুদ্ধ, কামালপুর ও কুষ্টিয়ার মিরপুরের যুদ্ধ, চালনা ও চট্টগ্রামের বন্দর ধ্বংস, পাহাড়তলী ও রাজশাহীর হত্যাযজ্ঞ, জাতীয় শহীদ মিনার ধ্বংস, সচিবালয়ে আক্রমণ, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আক্রমণ, রায়ের বাজারের বধ্যভূমি ও বুদ্ধিজীবী হত্যার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

মানচিত্রের উত্তর দিকটা উঁচু থেকে ক্রমান্বয়ে দক্ষিণ দিকটা ঢালু করা হয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলগুলোকে দেখানো হয়েছে পানির ওপর ভাসমান। এত বড় একটি অবকাঠামো, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করা এই মানচিত্রটি আজও হস্তান্তর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী ও আগত দর্শনার্থীরা। মুজিবনগর উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়া উদ্দীন বিশ্বাস বলেন, মুজিবনগর একটি ঐতিহাসিক স্থান এবং মানচিত্রটি স্বাধীনতার স্মৃতি বহন করে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে আমাদের দাবি, অতি দ্রুত মানচিত্র ও গ্যালারিটি হস্তান্তর নিয়ে যথাযতভাবে দেখভাল করা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান বলেন, নতুন করে মুজিবনগর কমপ্লেক্সের কাজ শুরু হবে অল্পদিনের মধ্যেই। হয়তো এজন্যই হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি বিলম্ব হতে পারে। তারপর আমি গণপূর্ত বিভাগে খোঁজ নিয়ে দেখছি।

সর্বশেষ খবর