সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

৭৫ ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই বেনাপোলে

বেনাপোল প্রতিনিধি

বাঙালি জাতির গর্ব ও অহংকারের দিন একুশে ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে ও ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে যশোরের বেনাপোল ও শার্শায় ৭৫ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই কোনো শহীদ মিনার। সরকারিভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন করার নির্দেশনা থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছরেও যশোরের শার্শা উপজেলা ও বেনাপোল পোর্ট থানার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। বিশেষ করে উপজেলা ও পোর্ট থানার ৩৩টি মাদরাসার একটিতেও শহীদ মিনার নেই। তাছাড়া প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়েও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।  প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শার্শা ও বেনাপোলে ২৬৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ১২৬টি প্রাথমিক ও প্রি-ক্যাডেট এবং কমিউনিটি মিলিয়ে আরও রয়েছে ৫৪টি। এদের মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ২৩টিতে। ৩৮টি হাইস্কুলের মধ্যে ২৭টিতে শহীদ মিনার আছে। ১২টি কলেজের মধ্যে মাত্র ৫টিতে শহীদ মিনার আছে। ৩৩টি মাদরাসার মধ্যে একটিতেও কোনো শহীদ মিনার নেই। তবে সব মিলিয়ে অর্ধ-শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। বেনাপোল সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইজ্জত আলী বলেন, ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার জন্য যারা শহীদ হয়েছিল যাদের স্মরণে আজও শার্শা উপজেলায় ৭৫ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনার গড়ে না ওঠায় শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধা ও স্মরণ করতে পারে না।

 এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যবাধকতা থাকলেও শার্শা-বেনাপোলের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। উপজেলার ১২টি কলেজ, ৩৮টি হাইস্কুল, ৩৩টি মাদরাসা ও অসংখ্য কিন্ডারগার্ডেন এর মধ্যে মাত্র ৩৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে। কিন্তু ৩৩টি মাদরাসার একটিতেও শহীদ মিনার গড়ে ওঠেনি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণে পত্র দেওয়ার পরও তারা শহীদ মিনার নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।  শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রব বলেন, ১২৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও প্রিক্যাডেট এবং কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫৪টি। ১৮০টি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬২ টিতে কোনো শহীদ মিনার নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ দরকার বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণ চন্দ্র জানান, উপজেলার প্রতিটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত। শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। এটা বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ স্থানীয়ভাবে নির্মাণ করতে পারে। পাশাপাশি সরকারি বেসরকারিভাবে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য শহীদ মিনার নির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

সর্বশেষ খবর