মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

নদীকে খাল দেখিয়ে খনন

আলপনা বেগম, নেত্রকোনা

নদীকে খাল দেখিয়ে খনন

নেত্রকোনার মদনে গোবিন্দ্রশী গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত চাওয়াই নদীকে খাল বানিয়ে চলছে খনন কাজ। ভূমি সংশ্লিষ্টরাও জানেন না নদী কীভাবে খাল হলো। এ ছাড়া কাজের সময় পার করে তড়িঘড়ি নদীর পাড়ের মাটি তুলে রাখায় আবারও ভরাট হচ্ছে খনন করা জায়গা। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে তাদের নানা হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করলে ঠিকাদার তাদের বিরুদ্ধেও করেছেন চাঁদাবাজির মামলা। নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, খাল খনন প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বেলাল কনস্ট্রাকশন খনন কাজ বাস্তবায়ন করছে। চাওয়াই চার কিলোমিটার খনন কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৮৮ টাকা। ২০২২ সালের ৬ জুন কাজ শুরু করে এ বছরের এ মাসে ৩০ এপ্রিল কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু কাজই শুরু হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। খননের জায়গা থেকে ৩৮-৪০ ফুট দূরত্বে মাটি ফেলার কথা থাকলেও তড়িঘড়ি কাজ শুরু করে পাড়েই ফেলছে মাটি। ফলে বৃষ্টিতে আবার সেই মাটি ধসে নদী ভরাট হচ্ছে। খনন প্রকল্পের তত্ত্বাবাধনকারী নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী ওবায়দুল হক বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বারবার বলা হচ্ছে মাটি নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য। মদন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহনূর আলম জানান, কাগজপত্র অনুযায়ী চাওয়াই হচ্ছে নদী। কিন্তু সেখানে খাল খনন প্রকল্প কীভাবে হয়েছে সেটা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলতে পারবে। মদন থানার ওসি মোহাম্মদ তাওদীদুর রহমান জানান, একটি চাঁদাবাজির লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে থানায় শুধু অভিযোগ করেছিলেন। এখন বুঝতেছেন মামলা রুজু করতে হবে। নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, আমার আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা বলতে পারবেন নদীতে কীভাবে খাল খনন প্রকল্প হয়েছে। পাড়ের মাটি সরিয়ে বিক্রি করার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ছয় সদস্যর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, খননের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ঠিকাদারি প্রতিনিধি স্থানীয় সাংবাদিক মোতাহার আলম চৌধুরী ও নূরুল আলম কামালসহ অজ্ঞাত তিনজনের বিরুদ্ধে মদন থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর