রাত হলেই ভারত সীমান্ত থেকে দল বেঁধে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বুনো শুয়োর। সারা রাত জমির ফসল নষ্ট করে মধ্যরাতে আবার ভারতে ফিরে যাচ্ছে এ শুয়োরের দল। প্রতি রাতে এমন তান্ডব চলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনকষা ইউনিয়নের ঠুঁঠাপাড়া গ্রামে। ফলে ফসল রক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটছে স্থানীয় কৃষকের। স্থানীয়রা জানান, ধান, গম, ভুট্টা, পাটসহ বিভিন্ন ফসল রাতের আঁধারে নষ্ট করে সূর্যের আলো ফোটার আগেই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ফিরে যায় বুনো শুয়োর। ফসল বাঁচাতে রাত জেগে পাহারা দিয়েও মিলছে না সুফল। উল্টো রাতে পাহারা দিতে গিয়ে বুনো শুয়োরের হামলার শিকার হয়েছেন একাধিক কৃষক। আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। ইতোমধ্যে শুয়োরের আক্রমণে প্রায় ৪০০ বিঘা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। তারাপুর গ্রামের আসাদুল্লাহ বলেন, প্রায় তিন মাস থেকে ঠুঁঠাপাড়া মাঠের জমিতে প্রতি রাতে শুয়োর দল বেঁধে ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে আবার ফিরে যাচ্ছে। তার দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা ছিল। কিছুদিন আগে বনো শুয়োরের দল এসে তা নষ্ট করে দিয়েছে। এখন তার ধানের জমির ফসলও নষ্ট করছে। সামাদ আলী নামে একজন বলেন, ভারত থেকে এসে বনো শুয়োর প্রতিটি ফসলের ক্ষতি করছে। এগুলো দেখতেও ভয়ঙ্কর। তার জমিতে এখন ধান আছে তাই সারা রাত পাহারা দেন। অনেকে শুয়োরের ভয়ে কাঁচা ধান কেটে নিচ্ছেন। তিনি বলেন, বুনো শুয়োরের দল যে জমির ওপর দিয়ে ছোটাছুটি করে, সেখানকার সব শেষ করে দেয়। ধান ছাড়াও গম ও ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ঠুঁঠাপাড়ার ধান চাষি সাদ্দাম আলী বলেন, দুই বিঘা জমিতে ধান রয়েছে তার। এখনো পাকেনি তার পরও কেটে নিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত এলাকা কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা রয়েছে। বুনো শুয়োর থাকা এলাকাটি ভারতীয় সীমানার মধ্যে এবং জঙ্গল ও নদীর ধারে হওয়ায় সেখানে কোনো বেড়া নেই। অবাধে শুয়োরের দল চলাফেরা করতে পারে। শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটলেও এ বছর বেড়েছে। বন বিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। শিবগঞ্জের ইউএনও আবুল হায়াত বলেন, বিভাগীয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদফতরকে জানানোর পর তারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, সীমান্ত এলাকায় এক ধরনের সাউন্ড তৈরি করতে হবে। এতে বনো শুয়োর রাস্তা পরিবর্তন করবে।