নানা সমস্যায় জর্জরিত ফেনী জেনারেল হাসপাতাল। এখানে বেডের চেয়ে রোগী অনেক বেশি। ইনডোর, আউটডোর ও ইমারজেন্সিতে সেবা নিতে আসা রোগীরা যেমন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন, তেমনি চিকিৎসকরা সেবা দিতে হিমশিমে পড়ছেন। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পুরো হাসপাতালটি অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন। দুর্গন্ধে রোগীদের নাকে হাত দিয়ে থাকতে হয় মাঝেমধ্যে। বাথরুমগুলোর সামনে গেলেই বমি আসে। জানা যায়, হাসপাতালটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা খুবই দুর্বল। নিত্য সেখানে টাকা-পয়সা ও মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকজন রোগী অভিযোগ করেন, হাসপাতাল থেকে তাদের কোনো ওষুধ দেওয়া হয়নি। যেসব ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়ার কথা তা তারা পাচ্ছেন না। এক্সরে মেশিনসহ প্রয়োজনীয় অনেক যন্ত্রপাতি নষ্ট। হাসপাতালটিতে ডাক্তার কর্মরত আছেন ৬৫ জন। যা চাহিদার অর্ধেকেরও কম। সেবিকা ও তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছেন চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ। হাসপাতালটির ডায়ালাইসিস সেন্টারে তিন শিফটে নেগেটিভ সাতজন করে রোগীর ডায়ালাইসিস করা যায়। রোগীর সংখ্যা দৈনিক এর কয়েকগুণ বেশি।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা কাটা-সেলাই করেন। তারা রোগীদের জিম্মি করে টাকা নেন। রোগীরা জানান, বেডের বাইরে থাকা ভর্তি রোগীদের খাবার দেওয়া হয় না। আর যাদের দেওয়া হয় তা মুখে দেওয়ার মতো নয়। হাসপাতালটিতে দালাল ও অ্যাম্বুলেন্স চালকদের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ার মতো। দেখা যায়, ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসারের রুমের দরজার সামনে রোগীদের দীর্ঘ লাইন, রুমের ভিতরেও ভিড়। হাসপাতালটির আইসিইউ সেবা খুবই রুগ্ন। ২০২০ সালের ১৭ মে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ সেবা চালু হয়। ইউনিটটিতে নেই পর্যাপ্ত জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট। এখানে সার্বক্ষণিক সাতজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকার কথা। আছেন একজন কনসালট্যান্ট ও একজন মেডিকেল অফিসার। ১৫ জন সেবিকা থাকার কথা থাকা। আছেন ৬ জন। পোর্টাবেল এক্সরে মেশিন, ইমারজেন্সি ডায়ালাইসিস সুবিধা, বেড সাইড ইকোকার্ডিওগ্রাম, আল্ট্রাসাউন্ড ও পর্দা না থাকায় সঠিক সেবা পাওয়া যায় না, অভিযোগ সংকটাপন্ন রোগীর স্বজনদের। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আসিফ ইকবাল জানান, নানা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার ও নার্সরা। পর্যাপ্ত জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট পেলে আমরা কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারব।