গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার টেংরাকান্দির চরের সেতু নির্মাণ করা হয় অর্ধযুগ আগে। এই দীর্ঘ সময়েও এর সংযোগ সড়ক হয়নি। কোনো যানবাহন এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারেনি। এ কারণে এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না এই সেতু। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকার শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার ফুলছড়ি ইউনিয়নের টেংরাকান্দি গ্রামের সঙ্গে বাজে ফুলছড়ি, ফুলছড়ি নৌঘাঁটিসহ অন্তত চারটি গ্রামের সংযোগ রক্ষার জন্য খালের ওপর প্রায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যরে এই সেতু নির্মাণ করা হয়। অর্ধযুগ আগে নির্মাণ করা এই সেতুতে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো দিয়ে। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘উড়াল ব্রিজ’ নামে পরিচিত। বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় এলাকার শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষকে। স্থানীয়রা জানান, সেতুটি নির্মাণের পর দুই পাশের সংযোগ সড়ক তৈরির আগেই বন্যা হয়। এরপর আর সংযোগ সড়ক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। স্থানীয়রা চাঁদা তুলে সেতুর দুই পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। টেংরাকান্দি এলাকার ব্যবসায়ী আবদুস সাত্তার মিয়া বলেন, এই পথ দিয়ে হাজারো মানুষের চলাচল। বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে মানুষসহ ছাত্রছাত্রীরা। ফুলছড়ির ব্যবসায়ী হামিদুর রহমান বলেন, সেতুটি জনগণের কোনো উপকারে তো আসেনি বরং প্রায়ই সাঁকো দিয়ে চলাচলের সময় ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে ছোট বাচ্চা ও বয়স্ক মানুষ চলাচলে পড়েছে অসুবিধায়। এই পথে চলাচলকারী নৌঘাঁটি এলাকার মালেক মিয়া বলেন, এর আগেও এখানে একটি সেতু ছিল। সেটি দিয়েও মানুষ চলাচল করতে পারেনি আবার এই সেতু হলেও মানুষের কোনো কাজে আসছে না।
ফুলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজহারুল হান্নান বলেন, নির্মাণের পর থেকে সংযোগ সড়কের অভাবে কোনো যানবাহন এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারেনি। ইউনিয়ন পরিষদেও তেমন কোনো বরাদ্দ নেই। পরে স্থানীয়রা চাঁদা তুলে সাঁকো তৈরি করে কোনোমতে হেঁটে চলাচল করে আসছে। ফুলছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শহীদুজ্জামান বলেন, সেতুটি পিআইও অফিসের নির্মাণ করা নয়। ওটা এলজিইডির হতে পারে।
ফুলছড়ি উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উপ-সহকারী প্রকৌশলী এস্তামুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি মুঠোফোনে বলেন, ব্যস্ত আছি। এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে তিনি রাজি নন বলে ফোন কেটে দেন।
ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ বলেন, ওই রাস্তাটি দিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত করে। সেতুটি নির্মাণের দায় করেছে এলজিইডি ও পিআইও অফিস কেউ স্বীকার করে না। জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় একাধিকবার বিষয়টি তুলে ধরেছি। কোনো সুরাহা না পেয়ে কিছুদিন আগে ১০ হাজার টাকাও দিয়ে এসেছি যাতে বাঁশের জাকলা তৈরি করে মানুষ যাতায়াত করতে পারে।