ফরিদপুরের মাচ্চর ইউনিয়নের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ধুলদিতে অবস্থিত বিদ্যুতের ৫০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্টের ট্যাংকের তেলে ভাসছে প্লান্টটির আশপাশ এলাকা। পাশের অন্তত ৩০টি বাড়ি ও কয়েকটি বাগান, পুকুর ও ফসলের খেতে তেল ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই এলাকার মানুষ, হাঁস-মুরগি ও পুকুরের মাছ। নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন সবজি খেত। ছড়িয়ে পড়া তেলের কারণে শঙ্কা জেগেছে পরিবেশদূষণের।
স্থানীয়রা জানান, গত রবিবার রাত থেকে বিদ্যুতের পাওয়ার প্লান্টের ট্যাংক থেকে অনবরত তেল বেরোতে থাকে। পরে তেল বিদ্যুৎ প্লান্টের আশপাশ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ওই এলাকার ফসলের মাঠ, ফলের গাছ; মেহগনি, কলা ও পেঁপে বাগান, শাকসবজির খেত তেলে ভেসে গেছে। আশপাশের দু-তিনটি পুকুরেও তেল ছড়িয়ে পড়েছে।
আনন্দ হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি পুকুরে রেণু পোনার চাষ করছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার পুকুর তেলে ভরে গেছে। এতে ৫০ হাজার টাকার রেণু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি গরিব। তাই যাদের তেলে আমার পোনা মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।’ পেঁপে খেত ও কলার বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া প্রশান্ত নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘পাওয়ার প্লান্টের ট্যাংকের তেলে আমার পেঁপে ও কলার বাগান ভেসে গেছে।’ এ বিষয়ে পাওয়ার প্লান্টে কর্মরত আউটসোর্সিংয়ের রাজা মিয়া নামে এক কর্মচারী বলেন, ‘এখানে অনেক তেল পড়েছে। বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা ব্যারেল ভরে তেল নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু তেল কীভাবে পড়ছে জানি না। স্থানীয় লেলিন মল্লিক এ প্রতিষ্ঠানের তেল লোড-আনলোডের ঠিকাদার। তারাই ভালো বলতে পারবেন।’ এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার লেলিন মল্লিকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ফরিদপুর বিদ্যুতের ৫০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমল আফ্রিদি বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ প্লান্টের ট্যাংক তুলনামূলক ছোট ও ধারণক্ষমতা কম। তাই বৃষ্টির পানিতে তেলের কিছু গাদ আশপাশ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং তা বালতি ভরে ব্যারেলে করে তুলে প্লান্টে নেওয়ার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমাদের জানালে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, গত বছরও এ রকম একটা ঘটনা ঘটেছিল। পরে সমাধান করা হয়েছিল বিষয়টির।