আজ নেত্রকোনা ট্রাজেডির ১০ বছর। এই দিনে (৮ ডিসেম্বর) জঙ্গীদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৮টি তাজা প্রাণ থেমে গিয়েছিল। অর্ধশতাধিক আহত হয়ে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছিল। স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল নেত্রকোনা। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে নেত্রকোনার আকাশ বাতাস। সেদিন উদীচীর একনিষ্ঠ কর্মী খাজা হায়দার হোসেন, সুদীপ্তা পাল শেলী, মোটর মেকানিক যাদব দাস, গৃহবধূ রানী আক্তার, ভিক্ষুক জয়নাল, রিক্সাচালক আফতাব উদ্দিন, রইছমিয়া ও অজ্ঞাতনামাসহ মোট ৮ জন নিহত হন।
গত ২০০৫ সালে নেত্রকোনা মুক্ত দিবসের প্রস্তুতি চলাকালে অজহর রোডে জেলা উদীচী ও স্থানীয় শতদল সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী কার্যালয়ের সামনে পরপর দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। প্রথম বোমাটি বিস্ফোরণ হলেও তাতে কেউ হতাহত হয়নি। সেই বোমাটি দেখতে সবাই প্রস্তুতি সভা এবং রিহার্সেল থেকে বেরিয়ে আসেন। পরবর্তীতে বোমাটি দেখতে দেখতে চোখের পলকেই এক সাইকেল আরোহী সকলের ভীরের মধ্যে দ্রুতবেগে ঢুকে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে ৮টি তাজা প্রাণ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। আহত হয়ে পড়েন আরও অর্ধ শতাধিক। নেত্রকোনার সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিহত যাদব দাসের লাশ দেখিয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী বলেন, যাদব দাস হিন্দু জঙ্গিবাদের নিউ ডাইমেনশন। দেশের সকল মিডিয়া বিষয়টি সঠিকভাবে জাতির সামনে তুলে ধরলে মিডিয়ার সমালোচনা এবং তোপের মুখে পড়েন মন্ত্রী। পরবর্তীতে মিডিয়ার সামনে জেলার স্থানীয় জনৈক বিতর্কিত সাংবাদিকের প্ররোচনায় করা তাৎক্ষণিকভাবে ওই মন্তব্যের জন্য তিনি দুঃখপ্রকাশ করেন।
নেত্রকোনাবাসী এই দিনটিকে প্রতিবছর ট্রাজেডি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। নেত্রকোনা ট্রাজেডি দিবস উদযাপন কমিটির উদ্যোগে কালো ব্যাচ ধারন, উদীচী স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পন, সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে রাস্থায় দাড়িয়ে ৫ মিনিট স্তব্ধ নেত্রকোনা পালন, প্রতিবাদী মিছিলসহ তথ্য চিত্র প্রদর্শন ও নাটক মঞ্চস্থ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৫/ রশিদা