সিদ্ধিরগঞ্জে ১৩’শ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের বাধ্য করে ২শ টাকার বিনিময়ে বই বিতরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় তুলকালাম ঘটনা ঘটেছে।
আজ শনিবার সকালে গোদনাইলের ৮৯ নং তাঁত খানা সরকারী প্রাইমারী বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্যরা এ ঘটনাটি ঘটায়। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের সাথে অশোভন আচরন ও শারিরিক নির্যাতন করে স্কুল থেকে বের করে দেয় পরিচালনা কমিটির সদস্য গাজী সেলিম আহমেদ।
এ ঘটনায় অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বই না পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে স্কুল থেকে বের হতে দেখা যায়। পরে স্কুলের বাহিরে অভিভাবকরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে এলাকাবাসী ও গণমাধ্যম কর্মীদের চাপে কিছু শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরৎ দিয়ে সাময়িকভাবে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।
অভিভাবকরা জানায়, শনিবার সকাল থেকে ৮৯ নং তাঁত খানা সরকারী প্রাইমারি বিদ্যালয়ে ১৩’শ শিক্ষার্থীর কাছে থেকে ভর্তি ও নতুন বই দেওয়ার নামে ২শ’ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা এমএ বারী, যুবলীগ নেতা মাহাবুব ও গাজি সেলিম। যারা টাকা দেয়নি তাদেরকে বই না দিয়ে জোর পূর্বক স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় অভিবাবকরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে পরিচালনা কমিটির সদস্য গাজি সেলিম আহমেদ ও মাহাবুব। এ ঘটনায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বই না পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে স্কুল থেকে বের হয়ে যায়। পরে স্কুলের বাহিরে অভিভাবকরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে এলাকাবাসী, অভিভাবক ও গণমাধ্যমকর্মীদের চাপে পরে কিছু শিক্ষার্থীর টাকা ফেরত দেন।
তানিয়া আক্তার নামে ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এম এ বারীর উপস্থিতিতে কান্না করে গণমাধ্যাম কর্মী ও এলাকাবাসীকে বলে, গাজী স্যার সকালে ২শ টাকা নিয়েছে এখন টাকা চাইলে সে স্কুল রুম থেকে বের করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিভাবক মো. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, আমার মেয়ে ৪র্থ শ্রেণিতে ভর্তি হতে আসলে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য গাজী সেলিম নতুন বই বাবদ ২শত টাকা দাবি করে। আমি এর প্রতিবাদ করলে অন্য স্কুলে ভর্তি করাতে বলেন।
ময়না আক্তার নামে আরেক অভিভাবক বলেন, গাজী সেলিমসহ অন্যান্য সদস্যরা আমার ছেলেকে ভর্তি করাতে এলে ২শ' টাকা চায়। এ সময় ১শ' টাকা দিলে গাজী সেলিম আমাকে স্কুল থেকে বের হয়ে যেতে বলে। তিনি বলেন, ২-৩ মাস পর পর বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ২০/৩০ টাকা করে নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আবুল হোসেন নামে আরেক অভিভাবক বলেন, সকালে ১শ' ৫০ টাকা দিয়ে আমার নাতিকে স্কুলে পাঠালে বই না দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা এম এ বারী বলেন, আমি গাজীকে বলেছিলাম ২ মাস পর টাকা নিতে। সে কোন কথা না শুনে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ২’শত টাকা নিচ্ছে। তিনি বলেন, এ টাকায় বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রইসউদ্দিন বলেন, সরকারের নিয়ম মেনে শুক্রবার থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে নতুন বই বিতরন করছি। তাহলে কেন এ টাকা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ভাল জানে। এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা আফরোজা সুলতানা চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা মাহফুজা আক্তার বলেন, বিষয়টি তার গোচরে এসেছে। বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আগামীকাল রবিবার ঘটনাস্থলে সরেজমিনে যাবেন জানান।
বিডি-প্রতিদিন/ ০২ জানুয়ারি ১৬/ সালাহ উদ্দীন