রংপুর বিভাগের ৯ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর একটিতেও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। এসবের মধ্যে দুুই হাজারের ওপর বিদ্যালয় রয়েছে মারাত্মক অগ্নিঝুঁকিতে। অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে কোনো ধরনের প্রস্তুতি নেই ফায়ার সার্ভিস কিংবা শিক্ষা বিভাগের। ফলে অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে তিন লাখের বেশি শিক্ষার্থী। রংপুর শিক্ষা অফিস ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রায় ৯ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখের ওপর শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ৮০ শতাংশই গ্রামে। মাত্র ২০ শতাংশ স্কুল রয়েছে শহর এলাকায়। তুলনামূলকভাবে গ্রামের স্কুলগুলোতে অগ্নিঝুঁকি কম থাকলেও শহরের স্কুলগুলোতে অগ্নিঝুঁকির মাত্রা বেশি। বিভাগের আট জেলায় প্রায় ২ হাজার স্কুল রয়েছে মারাত্মক অগ্নিঝুঁকিতে।
সূত্রমতে, অগ্নিঝুঁকিতে থাকা স্কুলগুলোতে কোনো অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। এমনকি আগুন লাগলে কীভাবে নিজেকে আত্মরক্ষা করতে হবে এমন কোনো প্রচারণাও নেই কোনো দপ্তরের। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে ভূমিকম্পবিষয়ক সচেতনতামূলক প্রচারণা থাকলেও অগ্নি দুর্ঘটনা রোধে কোনো প্রশিক্ষণ কিংবা প্রচারণা নেই। বিদ্যালয়ে অগ্নিকা রোধে কোনো লিফলেট কিংবা পাঠ্যপুস্তকে দিকনির্দেশনাও নেই। অগ্নিঝুঁকি মোকাবিলায় বাস্তবসম্মত এবং হাতেকলমে কোনো প্রশিক্ষণ না থাকায় শিক্ষার্থী, অভিবাবক ও শিক্ষকদের মাঝে সব সময়ই অগ্নি আতঙ্ক থেকে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করার নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আদেশে বলা হয়েছিল, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করে অতিঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয় ভবনগুলো চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিতকরণে প্রয়োজনে উপজেলা প্রকৌশলী ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সহায়তা নেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চি?িহ্নতের নির্দেশ দিলেও অগ্নিঝুঁকির বিষয়টি রয়ে গেছে উপেক্ষিত। অভিভাবক ইমরোজ হোসেন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলগুলো চিহ্নিত করে আগুন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে রংপুর বিভাগীয় শিক্ষা উপ-পরিচালক আজিজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়েগুলোতে আগুন প্রতিরোধে তেমন একটা ব্যবস্থা নেই। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে তা সংস্কার করা হচ্ছে। গ্রামের বিদ্যালয়গুলোর চেয়ে শহরের বিদ্যালয়গুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসের উপপরিচালক মো. আনোয়ারুল হক বলেন. আমরা প্রতি শনিবার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে মহড়া দিয়ে থাকি। অগ্নি প্রতিরোধে পরামর্শ দিয়ে থাকি। প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিজ দায়িত্বে অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা রাখা উচিত।