চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের প্রধান ফসল ধান। আর এ ফসলের ওপরই নির্ভর করে বেঁচে থাকে সিরাজগঞ্জের হাজার হাজার কৃষক-শ্রমিক। এবার উৎপাদন ভাল হওয়ায় কৃষক-শ্রমিকরা মহোৎসবে ধান কাটা শুরু করেছে। ধানের দাম ভাল হওয়ায় কৃষকরাও আনন্দিত। তবে বর্তমানে ধান বিক্রি করে কৃষক যে দাম পাচ্ছেন-ধান কাটা শেষ হওয়া পর্যন্ত সেই দাম থাকলে উপকৃত হবেন বলে কৃষকেরা জানিয়েছেন। এছাড়াও সরকারিভাবে ন্যায্যমূল্যে ধান দলীয় নেতাদের মাধ্যমে ক্রয় না করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করার দাবিও জানিয়েছেন কৃষকরা।
জানা যায়, সিরাজগঞ্জে ৬১ হাজার ১৭৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যা বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশী। আবহাওয়া অনুকুল ও পোকামাকড়ের আক্রমন না থাকায় এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের ফলন দেখে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। কৃষকের পাশাপাশি শ্রমিকরাও ধানকেটে ন্যায্য মুজুরি পেয়ে খুশি। ফলন ভাল হওয়ায় হেক্টর প্রতি তিন টন চাল উৎপাদন হবে। বাজারের নতুন ধানের দাম ৮শ' থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি করতে পারায় কৃষকরাও আনন্দিত।
কৃষক আব্দুল আজিজ ও তারা মিয়া জানান, বিগত দশ বছরের চেয়ে এবার ধানের ফলন ভাল হয়েছে। দামও ভাল। যেহেতু এই ধানের উপরই আমাদের সংসার নির্ভর করে তাই দাম যদি স্থায়ী থাকে তবে আমরা ভালো থাকতে পারবো।
আদিবাসী শ্রমিক নিরালা মাহাতো ও আব্দুর করিম জানান, অন্যান্য সময় কাজকর্ম কম থাকে। আর ধান কাটার মৌসুমে কাজ বেশি থাকে। সারাদিন দিন ৩শ' থেকে সাড়ে ৩শ' টাকা পাওয়া যায়। এ দিয়ে ভালোভাবে সংসার চলে যায়।
সলঙ্গা গ্রামের কৃষক আকতার হোসেন, সরকার যদি দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ধান ক্রয় না করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করতো তবে কৃষকেরা উপকৃত হতো।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জ জেলা উত্তরাঞ্চলের শস্য ভান্ডার। এ পর্যন্ত মাঠে ৪০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে ফলন বেশি। গড় প্রতি হেক্টরে ৩ টন চাউল উৎপাদন হবে। ধানের ন্যায্য মূল্য পেয়ে খুশি।
বিডি প্রতিদিন/৩০ নভেম্বর ২০১৬/হিমেল