নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে আধিপত্য বিস্তার করতে না পেরে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা সিভিল সার্জনের কক্ষসহ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। তারা ডাক্তার ও পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান। এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সপ্তাহে দুইদিন সকাল ৮ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত ভিজিটের তারিখ ধার্য্য করে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও তারা অধিপত্য বিস্তার করে দিনভর হাসপাতাল দখলে রাখে। যে কারনে নার্স রোগীসহ স্বজনদের সাথেও প্রায়ই ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের বাগবিতন্ডা লেগে যায়। এ জন্য হাসপাতালের পরিবেশ সুন্দর রাখতে গত মাস দুয়েক ধরে দু'জন পুলিশ ডিউটি করে।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ওষুধ কোম্পানির প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিনিধি হাসপাতালে ভিড় জমায়। এতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে চরম অসুবিধায় পড়তে হয় ডাক্তারসহ নার্সদের। পরবর্তীতে তাদেরকে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করা নির্দেশ দিলেও তারা বের না হয়ে কেন তাদের বের করে দেওয়া হবে তা নিয়ে কর্তব্যরত ডাক্তারদের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে রিপ্রেজেন্টিটিভদের বের করার চেষ্টা করলে পুলিশের সাথেও তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে তারা একত্রিত হয়ে হাসপাতালের সিভিল সার্জনের কক্ষে ভাঙচুর চালায়।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর শেখ হেলাল উদ্দিন ক্ষোভের সাথে জানান, এই হাসপাতালের কমিটিতে মন্ত্রী নিজে আমাকে দ্বায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু কোন মতেই রিপ্রেজেন্টিটিভদের আধিপত্য কমানো যাচ্ছে না। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী স্বজনরা তাদের হয়রানীর শিকার হন প্রতিনিয়ত। ডাক্তার প্রেসক্রিপশন লিখে দিতেই তারা হাতিয়ে নেয়। কারটা লিখলো, কারটা লিখলো না- এ নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণ দরকার।
হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, তাদেরকে সপ্তাহে দু'দিন দেয়া হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে ভিজিট করে চলে যাবে। কিন্তু তারা কেউ মানছেন না এই নির্দেশ। তারা সারক্ষণ ডাক্তারদের পিছনে লেগে থাকে। এতে রোগী দেখায় ভীষণ বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এদিন তাদেরকে চলে যেতে বললে তা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
এ ঘটনায় আটককৃত ১০ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ