বাদাম বিক্রেতার ছেলে মো. হাসানুজ্জামান চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেলেও তার সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উচ্চতর শিক্ষার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থনৈতিক দৈন্যতা। দারিদ্রতার কারণে ভেঙে যেতে বসেছে তার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন।
চুয়াডাঙ্গা জাফরপুর স্টেডিয়াম পাড়ার বাসিন্দা মো. ঝড়ু শেখ। তিনি ফেরি করে বাদাম বিক্রি করেন। অভাবের সংসারে রয়েছে তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে মো. হাসানুজ্জামান এ বছর চুয়াডাঙ্গা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ফলাফলে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে চোখে খুশির ঝিলিক দেখা দিলেও ভবিষ্যতের ভাবনায় তা মিলিয়ে যায় অল্প সময়েই।
সরেজমিনে ঝড়ু শেখের বাড়ি গিয়ে জানা যায়, চার ভাইবোনের মধ্যে হাসানুজ্জামান সবার বড়। তার পরে আছে বোন সুমাইয়া আক্তার সাথী। সাথী আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। এরপর দুভাই নবম শ্রেণি পড়ুয়া মো. রফিকুল হাসান ও পঞ্চম শ্রেণির মো. জামিউল ইসলাম। এমনিতেই বাদাম বিক্রি করে চার ছেলেমেয়ের লেখাপড়া শেখাতে হিমশিম খেতে হয় ঝড়ু শেখকে। বাবার ব্যয়ভার কিছুটা কমানোর জন্য নিজের লেখাপড়ার পাশাপাশি টিউশনির পথ বেছে নেয় হাসানুজ্জামান।
হাসানুজ্জামান জানান, নিজের উপার্জিত টিউশনির টাকা ও শিক্ষকদের সহযোগিতার কারণে এতোদিন তার লেখাপড়া সচল ছিলো। ভবিষ্যতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশ সেবার স্বপ্ন দেখে সে। কিন্তু সে স্বপ্ন সত্যি হবে কি-না তা নিয়ে নিজেই সন্দিহান হাসানুজ্জামান। হাসান বলে, সমাজের অনেক বৃত্তবানই তো দরিদ্র মেধাবীদের পাশে দাঁড়ায়। সহযোগিতা করেন স্বপ্ন পূরণে। এজন্য তারও প্রত্যাশা কোনো না কোনো হৃদয়বার ব্যক্তি বাড়িয়ে দেবেন সহযোগিতার হাত। পূরণ করবেন তার স্বপ্ন।
হাসানুজ্জামান অষ্টম শ্রেণির জেএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ ৪ দশমিক ৮৯ নম্বর পেয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। দরিদ্র পিতার সম্পদ বলতে রয়েছে দু’কাঠা জমির উপর চাটাইয়ের বেড়া দেয়া দুটি খুপড়ি ঘর। তাতেই ছয়জনের পরিবার নিয়ে বসবাস করে তারা।