রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ৯০ জন নিহত ও প্রায় ৪০জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। উদ্ধার কাজে নেমেছে- সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। আহতদের চিকিৎসাসেবা দিতে বিভিন্ন স্থানে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্র জানা গেছে, মঙ্গলবার টানা বর্ষণে রাঙামাটি জেলার সদর, কাইখালী উপজেলা, বিলাইছড়ি উপজেলা, কাপ্তাই উপজেলা ও জুরাছড়ি উপজেলায় পাহাড় ধসে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এছাড়া, শহরের ভেদভেদী নতুন পাড়া এলাকা, রাঙাপানি, মানিকছড়ি, রিজার্ভ বাজার তবলছড়িসহ বিভিন্ন এলকায় মাটি চাপা পড়েছে আরও বেশ কিছু বসতঘর। তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
রাঙামাটি জোনের জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল মো, রেদওয়ানুল হক জানান, রাঙামাটি শহর থেকে ২ কি.মি. দূরে শহরের প্রবেশমুখে মানিকছড়ি রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের পাহাড় ধসের কারণে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে আছে, এমন খবরের ভিত্তিতে রাঙামাটি সদর জোনের সেনাবাহিনীর একটি দল উদ্ধার কাজ চালাতে যায়। দলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এসময় হঠাৎ নতুন করে পাহাড় ধস শুরু হলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৪ জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১২ সেনা। এ ঘটনায় আরও এক সেনা সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন।
নিহতরা সকলেই উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত ছিলেন বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে ২ সেনা কর্মকর্তা হলেন- মেজর মাহফুজ (৪৪ লং কোর্স) ও ক্যাপ্টেন তানভির (৬৪ লং কোর্স)। আহতরা সকলে মানিকছড়ি রিজিয়ন সিএমএইচে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা হচ্ছেন- সৈনিক আজমল, মামুন, ফিরোজ, মোজাম্মেল ও সেলিম। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা পাঠানো হয়েছে।
এদিকে রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জেন ডা. শহীদ তালুকদার জানান, নিহতদের ময়নাতদন্তের পর তাদের পরিবারগুলোকে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া আহতদের জন্য বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।
এব্যাপারে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান জানান, এঘটনায় খবর পাওয়ার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসে। আর নিহত পরিবারগুলোকে তাৎক্ষণিক ২০ কেজি চাল ও ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এখনো উদ্ধার তৎপরতা অব্যহত রয়েছে।
অন্যদিকে, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা জানান, প্রতি নিহত পরিবারগুলোকে পরিষদের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শহরে ১০টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতেও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
অপরদিকে, পাহাড় ধসে হতাহতদের দেখতে ও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে বুধবার রাঙামাটি যাবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
বিডি প্রতিদিন/১৩ জুন ২০১৭/এনায়েত করিম