চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর সীমান্তে ভারতীয় গরু নিয়ে চাঁদা আদায়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রঘুনাথপুর বিট বা খাটালের মালিক খালেকের সশস্ত্র ক্যাডার বকুল ও নাসিরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বেপরোয়া বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ১০ জন গরুর রাখাল আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, গত রবিবার সীমান্তবর্তী রঘুনাথপুর গ্রামের আশেপাশের রাখালরা সীমান্ত পয়েন্ট থেকে খাটালে গরু আনার দাবি জানায়। এসময় খাটাল মালিক খালেকের সন্ত্রাসীরা একদফা রাখালদের ওপর হামলা চালায়। এতে ১০ জন স্থানীয় রাখাল আহত হয়। এদিকে রবিবারের মতো আজ বুধবার সকালেও স্থানীয় রাখালরা গরু আনার সুযোগ দেওয়ার দাবি করেন খাটাল মালিক খালেকের কাছে।
এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে খালেকের ভাড়া করা সন্ত্রাসী বকুল ও নাসিরের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সন্ত্রাসীর একটি দল রাখালদের লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা রাখালদের বাড়িঘর ও গ্রামে ঢুকে ও সীমান্ত এলাকায় বেপরোয়া হাতবোমা ছুড়ে। এসময় পুরো সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে রঘুনাথপুর খাটালের পার্শ্ববর্তী খাকচাপাড়া, গাইপাড়া এবং হঠাৎপাড়া গ্রামের নারী পুরুষ ও শিশুরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়।
পরে রঘুনাথপুর বিজিবির সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। স্থানীয় রাখালরা অভিযোগ করে বলেন, খালেক জামায়াতের একজন ক্যাডার। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে। খাটালটি চালু হওয়ার পর খালেক শহর থেকে শতাধিক রাখাল ও ক্যাডার ভাড়া করে খাটালে পাহারা বসায়। স্থানীয় রাখালদের বাদ দিয়ে ভাড়া করে আনা রাখালদের দিয়ে সীমান্ত পয়েন্ট থেকে গরু আনার কাজ করছিল। এ নিয়ে স্থানীয় রাখালরা গরু আনার দাবি করলে এ ধরণের হামলার ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী আরও জানায়, খাটাল মালিক খালেকের সশস্ত্র ক্যাডাররা গরু থেকে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হামলা ও বোমাবাজির কথা অস্বীকার করে খাটাল মালিক খালেক বলেন, স্থানীয়রা জোরপূর্বক গরু নেওয়ার দাবি করছিল। এছাড়া তারা খাটাল পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করছে।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুল ইসলাম হাবিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং বর্তমানে আমি নিজেও ঘটনাস্থলে রয়েছি। তিনি আরও জানান, দুর্গম সীমান্ত এলাকা রঘুনাথপুর। দীর্ঘ নদী পাড়ি দিয়ে সেখানে যেতে হয়। এছাড়া সেখানে পুলিশ ফাঁড়ি না থাকায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই।
বিডি প্রতিদিন/১৪ জুন ২০১৭/হিমেল