শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি গ্রাম থেকে বকুল সুলতানা (৪৬) নামে এক গৃহবধূকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। গত ৭ জুন ভোররাতে বাড়ি থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। ওই নারীর স্বামী হাবীবুর রহমান ও তার এক আত্মীয় জাহাঙ্গির হোসেনকে আসামি করে নড়িয়া থানায় ১৩ জুন মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন ওই দম্পত্তির ছেলে মোহাম্মদ আলী বেপারি। শুক্রবার ওই গৃহবধূর চার শিশু সন্তান সংবাদ সম্মেলন করে মাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানায়।
নড়িয়া থানা ও স্থানিয় সূত্র জানায়, নড়িয়া উপজেলার আকসা গ্রামের মৃত সোহরাব মীরের মেয়ে বকুল সুলতানার বিয়ে হয় একই উপজেলার কলুকাঠি গ্রামের হাবীবুর রহমান বেপারির সাথে। তাদের চারটি সন্তান রয়েছে। হাবীবুর রহমান ঢাকায় একটি পোষাক বিক্রির দোকানে কাজ করেন। বকুল সুলতানা সন্তানদের নিয়ে কলুকাঠি গ্রামে বসবাস করতেন। পরিবাদের সদস্যদের অজান্তে পাঁচ বছর আগে হাবীবুর রহমান আরেকটি বিয়ে করেন। ওই স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতে থাকেন। এ নিয়ে বকুল হাবীব দম্পত্তির বিরোধ হয়। হাবীব তাদের ভরন পোষন দেয়া বন্ধ করে দেন। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে বকুল আইনের আশ্রয় নেয়ার প্রস্তুতি নেন। এতে হাবীব আরো ক্ষুব্ধ হন।
গত ৭ জুন সেহেরি ও নামাজের পরে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন বকুল সুলতানা। বকুলের ভাই লোকমান মীর ওই দিন থানায় সাধারন ডায়েরি করেন। বকুলের সন্ধান না পেয়ে তার ছেলে নড়িয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ আলী থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করে। মামলায় তার বাবা হাবীবুর রহমান ও তার এক আত্মীয় জাহাঙ্গির হোসেনকে আসামি করা হয়।
মাকে ফিরে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে বকুল সুলতানার চার শিশু সন্তান। তারা তাদের মাকে জীবিত ফিরিয়ে দেয়ার আহবান জানায় পুলিশের কাছে।
বকুল হাবীব দম্পত্তির ছেলে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার বাবার বিয়ের বিষয়টি দুই বছর আগে আমরা জানতে পারি। তখন থেকেই সে আমার মা ও আমাদের অত্যাচার করতে থাকে। আমাদের সংসার খরচের টাকা দেয়া বন্ধ করে দেন। ৭ জুন ভোরে প্রতিবেশি জাহাঙ্গির মাকে ঘর থেকে ডেকে রাস্তায় নিয়ে যায়। তখন বাবা তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। থানায় মামলা করেছি, পুলিশ এখনও মাকে উদ্ধার করতে পারেনি। বাবা আমাদের ছেরে চলে গেছে, মাকে অপহরণ করা হয়েছে। এখন কে আমাদের আশ্রয় দেবে। আমরা ছোট ছোট ভাই বোনেরা মায়ের ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। আপনারা আমদের মাকে খুঁজে পেতে সহায়তা করুন।
এদিকে থানায় মামলা হওয়ার পর থেকে জাহাঙ্গির ও হাবীবুর রহমান পলাতক রয়েছে। মুঠোফোনে চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, গৃহবধূ অপহরণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। স্বামীর বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ এনে তার ছেলে মামলা করেছে। মামলার পর থেকে দুই আসামি পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। ওই নারীকেও খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/১৬ জুন ২০১৭/হিমেল