মাহবুবুর রহমান মিঠু (৫০), যার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ মানিকগঞ্জের সিংগাইরের মানুষ। গত আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী আমলে তিনি সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার জন্য উন্মুখ থাকতেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তোলা তার ছবি এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।
কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে অবস্থা বুঝে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন তিনি। পদ পাওয়ার পর চুপ ছিলেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শুরু হয় তার চাঁদাবাজি ও দখল বাণিজ্য।
মিঠুর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসন ও সিংগাইর থানায় একাধিক অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। সিংগাইরে কথিত আছে, আওয়ামী লীগের দোসর মিঠু চাঁদার নাম নিলেই তাকে দিতে হয় পাঁচ লাখ করে টাকা। ইটভাটা থেকে শুরু থেকে জমি দখল বাণিজ্যও চলছে তার। এসব কাজে তার নিজস্ব দলবল রয়েছে।
মিঠুর ঘনিষ্ঠরাই অভিযোগ করে বলছেন, মিঠু গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ থেকে নিজের আখের গুছিয়েছেন। আবার একই ব্যক্তি দল বদল করে কীভাবে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
সিংগাইর থানা বিএনপির সভাপতি আবিদুর রহমান রোমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মিঠুর নামে অভিযোগের শেষ নাই। সে চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা জোরজুলুম করে বিএনপির অনেক দুর্নাম করছে। সিংগাইরবাসী ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা এই ধরনের চাঁদাবাজ থেকে রেহাই পেতে চায়। আমি ৩৫ বছর ধরে রাজনীতি করি। কেউ আমার নামে তো কোনো অভিযোগ দেয় না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মিঠুর বহু ছবি, চাঁদাবাজিসহ সব অপকর্মের ফিরিস্তি দলের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। এখনো কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকসহ সাধারণ মানুষের স্বার্থে মিঠুর বিরুদ্ধে কঠিন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপরমহলে আমার আবেদন থাকবে।’
সিংগাইর পৌর শাখা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা মিঠুর মতো চাঁদাবাজ, ধান্ধাবাজ দলের দুর্নামকারীদের চাই না। তাদের জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তারেক রহমান যেভাবে চাচ্ছেন উনার নির্দেশনা মতে আমরা সে ধরনের স্বচ্ছ লোক চাই।’
তবে অভিযোগগুলো অস্বীকার করে দেওয়ান মাহবুবুর রহমান মিঠু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনার সত্যতা নেই। আর আমি আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী কি না এখন আমার ‘পদ’ দেখে বোঝেন না।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ