নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে গতকাল সকালে শ্রমিক ও যৌথ বাহিনীর মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় একজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। এদের মধ্যে সাতজন নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিকে, সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লেও বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষের পরপরই সেখানে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি যৌথভাবে কাজ করছে।
নিহত শ্রমিকের নাম হাবিব ইসলাম (২০)। তিনি নীলফামারী সদরের সংগলশী ইউনিয়নের কাজীরহাটের দুলাল হোসেনের ছেলে এবং ইপিজেডের ইকো কোম্পানির কর্মী ছিলেন। জানা যায়, হাবিব ইকু কোম্পানিতে নৈশপ্রহরীর কাজে কর্মরত ছিলেন। রাতে দায়িত্ব পালন শেষে গতকাল সকালে বাড়ি ফেরার পথে সংঘর্ষের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে তিনি নিহত হন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীরুল ইসলাম বলেন, সকাল পৌনে ৯টার দিকে উত্তরা ইপিজেড থেকে সংঘর্ষের ঘটনায় আহতরা আসতে থাকে। মৃত অবস্থায় হাবিব নামে এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়। তার বুকে একটু ক্ষত ছিল। তবে এটি গুলির চিহ্ন কি না তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া বলা সম্ভব নয়। আর সংঘর্ষের বিষয়ে নীলফামারী ব্যাটালিয়ন ৫৬ বিজিবির লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম বদরুদ্দোজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘উত্তরা ইপিজেডের ঘটনায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি যৌথভাবে কাজ করছে। প্রশাসনিক পর্যায়ে কার্যক্রম চলছে এবং সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে শ্রমিকদের অভিযোগ, ইপিজেডের এভারগ্রীন কারখানাতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে তারা দুই দিন ধরে আন্দোলন করছিলেন। সোমবার দিবাগত রাতে হঠাৎ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান বন্ধের নোটিস দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সকালে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানের প্রধান গেটে তালা লাগিয়ে দেন। আর কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের নোটিসে জানিয়েছে, টানা আন্দোলনের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি ২ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী নোটিসে পুনরায় চালুর কথা শ্রমিকদের জানানো হবে।