মহাকাশে সফলভাবে অত্যাধুনিক সামরিক গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে ইসরায়েল। এর নাম ‘ওফেক–১৯’।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় ইসরায়েলের পামলাচিম বিমানঘাঁটি থেকে ‘শাভিত’ রকেটের মাধ্যমে স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে পাঠানো হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উৎক্ষেপণের পরপরই স্যাটেলাইটটি নির্ধারিত কক্ষপথে প্রবেশ করে এবং তথ্য প্রেরণ শুরু করেছে। একাধিক প্রাথমিক পরীক্ষাও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এ সাফল্যকে শুধু প্রযুক্তিগত মাইলফলক নয়, বরং শত্রুদের জন্য স্পষ্ট সতর্কবার্তা বলেও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা সব সময়, সব পরিস্থিতিতে আমাদের শত্রুদের নজরদারিতে রাখছি।”
কাটজ আরও জানান, এই সক্ষমতা আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার পথও খুলে দিতে পারে। তবে নিরাপত্তা শক্তিশালী করার জন্য ইসরায়েল মহাকাশ ও স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে।
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের দৃশ্য রাজধানী তেলআবিবসহ আশপাশের অঞ্চলে সাময়িক আতঙ্ক তৈরি করে। অনেকে এটিকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেবে ভুল করেছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অনেক পথচারী আকাশে ছুটে চলা রকেটকে বিস্ময়ের সঙ্গে দেখছেন।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ওফেক–১৯’ একটি সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট, যা দিন–রাত যেকোনও সময় উচ্চ রেজোলিউশনের ছবি ধারণ করতে সক্ষম। ৫০ সেন্টিমিটারেরও ছোট বস্তু শনাক্ত করার ক্ষমতা রাখে এ স্যাটেলাইট।
স্যাটেলাইটটি পূর্ণ কার্যক্রমে গেলে এর দায়িত্ব নেবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখার বিশেষ ইউনিট ৯৯০০, যারা মূলত ভিজ্যুয়াল ইন্টেলিজেন্স বা চিত্রভিত্তিক গোয়েন্দা কাজে বিশেষজ্ঞ।
উৎক্ষেপণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আমির বারাম, প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ড্যানি গোল্ড এবং ইসরায়েল এয়ারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএআই)-এর প্রধান নির্বাহী বোয়াজ লেভি।
‘ওফেক–১৯’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে আইএআইয়ের মিসাইল ও স্পেস গ্রুপ, ইলটা গ্রুপ এবং এমএলএম বিভাগ। রকেট ইঞ্জিন তৈরি করেছে টোমার লিমিটেড ও রাফায়েল অ্যাডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমস।
এই উৎক্ষেপণ ইসরায়েলের দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ কর্মসূচির অংশ, যার নেতৃত্বে রয়েছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন অধিদফতর, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী। এর আগের বছর মার্চে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ‘ওফেক–১৩’। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল
বিডি প্রতিদিন/একেএ