নারী শিক্ষার্থীর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও শিক্ষার্থীকে শাসানোর ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসন ভবন চত্বরে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। তারা অভিযুক্ত শিক্ষক আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দীন মিঝির প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ভাইরাল হওয়া অডিওটিতে ওই শিক্ষককে রাগান্বিত স্বরে শিক্ষার্থীদেরকে ধমক দিতে শোনা যায়। ক্লিপে শোনা যায়, ‘ওই মেয়ের হাতে মাইক দিয়েছে কে? ওই মেয়ের আল-কুরআনের (বিভাগের) কী? ডিপার্টমেন্টকে ধ্বংস করছো কেন? ডিপার্টমেন্টকে ধ্বংস করার অধিকার দিয়েছে তোকে কে? ওই মেয়ে যদি আমার ডিপার্টমেন্টের হতো, আমার আপত্তি হতো না। আমি আল-কুরআনের টিচার, আমার সাথে গেছে ওখানে জিন্স প্যান্ট, গেঞ্জি পরে।’ এ সময় তিনি পোশাক নিয়ে একটি অপ্রকাশযোগ্য মন্তব্যও করেন অডিওতে।
ভাইরাল হওয়া ওই অডিওতে তিনি আরও বলেন, তোরে আন্দোলনে ডাকছি আমি। কোন অধিকারে তুই আমার ডিপার্টমেন্টের উপরে কথা কইস। তুই আল কুরআনে না থাকলে আমার কিছু যায় আসে না। কোথাকার কোন মৃত একটা পোলা সে তো ছাই হইছে, চলে গেছে। এখন থেকে ক্লাস চলবে, পরীক্ষা চলবে, আন্দোলনও চলবে সব কিছুই চলবে।
বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এমন জায়গা যেখানে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। কে কী পোশাক পরবে, সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। একজন শিক্ষক হিসেবে এ ধরনের মন্তব্য লজ্জাজনক।
ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম পুষ্প বলেন, আপনি প্রশ্ন করেছেন কেন আমার হাতে মাইক দেওয়া হলো—বরং বলুন কেন আমাদের এখনো কথা বলতে হচ্ছে? ১০৪ দিনেও হত্যার বিচার হয়নি বলেই আমাদের কথা বলতে হচ্ছে। কীভাবে আপনি আমাদের পোশাক নিয়ে এমন কথা বলতে পারেন? আমাদেরও স্বাধীনতা আছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এদিকে, ড. নাছির উদ্দীন মিঝি এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানা গেছে।
বিডি-প্রতিদিন/সুজন