মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ভেটেরিনারি মেডিসিন অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স অনুষদের সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পাসে কর্মরত রাজস্ব খাতের সৃজনকৃত আউটসোর্সিং প্রকল্পের ৩৪ জন কর্মচারী গত ১১ মাস ধরে বেতন না পেয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থায় তারা বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি ক্যাম্পাস চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধনে কর্মচারীরা দ্রুত বকেয়া বেতন পরিশোধ ও স্থায়ী নিয়োগের দাবি জানান।
কর্মচারী আব্দুস সাত্তার জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমরা প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলাম এবং নিয়মিত বেতন-ভাতা পেতাম। ২০২৪ সালে কলেজটি টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হস্তান্তর করা হয়। তখন ৩৬ জন কর্মচারীসহ সমস্ত কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রথম পাঁচ মাস মাভাবিপ্রবি আমাদের বেতন দিলেও গত ১১ মাস ধরে কোনো বেতন দিচ্ছে না। দ্রুত বেতন না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া আমাদের সামনে কোনো পথ থাকবে না।’
অন্য কর্মচারী মোহন অভিযোগ করেন, ‘আমরা নিয়মিত কর্মচারী হয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আমাদের চাকরি বাতিলের চেষ্টা করছেন। আমরা প্রায় ১০ বছর ধরে কাজ করছি। এখন বয়সও অনেক হয়ে গেছে। চাকরি চলে গেলে পরিবার নিয়ে বাঁচব কিভাবে? তাই দ্রুত আমাদের চাকরি স্থায়ী করে নিয়োগপত্র দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
কর্মচারী আশাদুল কবির ও হামিদা খাতুন বলেন, ‘প্রত্যেকের পরিবারে অন্তত তিন থেকে চারজন সদস্য রয়েছে। ১১ মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। সন্তানের চিকিৎসা, খাবার—কিছুই ঠিকভাবে করতে পারছি না। দ্রুত বকেয়া বেতন পরিশোধ ও নিয়োগপত্র দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আনোয়ারুল আজীম আকন্দ বলেন, কলেজটি হস্তান্তরের সময় ৩৬ জন কর্মচারীকে হস্তান্তর করা হয়নি। তাই নিয়মিত বেতন দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে মানবিক কারণে পাঁচ মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে।’
ভবিষ্যতে এই কর্মচারীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত কী হবে—এমন প্রশ্নে ভিসি বলেন, ‘এ মুহূর্তে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে হস্তান্তরের নথিতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে- জমি, ভবন, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও রাজস্ব খাতের সৃজনকৃত আউটসোর্সিং প্রকল্পের কর্মচারীসহ মোট ৩৬ জন কর্মচারী কর্মরত ছিলেন।’
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ