গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে রামদেব দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে চলছে চাষাবাদ। এতে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এসব শিক্ষার্থীদের।
জানা গেছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ-রংপুর আঞ্চলিক সড়কের পাশে গড়ে ওঠা এ বিদ্যালয়ে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের বারান্দায় ছেলেমেয়েরা ছোটাছুটি করছে। আর বাকিরা ক্লাসরুমে দাঁড়িয়ে তা দেখছে। শিক্ষার্থীর অভিভাবক মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মাঠে ছেলেমেয়েদের খেলাধুলা করার কথা। কিন্তু সেখানে ধান চাষ হচ্ছে। আশপাশে আর স্কুল না থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে এখানে বাচ্চা পড়াচ্ছি।’ বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের রামদেব গ্রামে ১৫০ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি। আশপাশের ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়। প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছে। স্কুলের সামনের মাঠের সাড়ে তিন বিঘা জমি বন্দক রাখা হয়েছে। ঘরের সামনের জায়গায় চাষ করা হচ্ছে ধান। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেশমী আক্তার, শারমিন আক্তার ও সোহেলী আক্তার বলেন, আমাদের খেলার মাঠ দখল করে ধান ও ঘাস চাষ করা হচ্ছে। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শেফালী আক্তার, লামিয়া আক্তার ও সাগরীকা আক্তার জানায়, খেলার মাঠে ধান চাষ করায় ক্লাসরুমেই সময় কাটাতে হয়। শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই সামনের জায়গাটায় পানি উঠে। আমাদের ক্লাসেই বসে থাকতে হয়। সাবেক ছাত্র মেহেদী হাসান ও নাজমুল হুদা বলেন, এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সহকারী প্রধান শিক্ষক বদিয়ার রহমান বলেন, এখানে আসার পর থেকেই দেখছি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ধান চাষ হচ্ছে। বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষক জানেন। প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বসুনিয়া বলেন, আমার আগে যে প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি ওই মাঠের জমিটি বন্দক রাখেন। এখনো ওই অবস্থায় আছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বন্ধকের টাকা ম্যানেজ না হওয়ায় ওই জমি ছাড়িয়ে নেওয়া যায়নি। টাকার ব্যবস্থা হলে জমিটি ছাড়িয়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য ব্যবস্থা করা হবে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার বেলাল হেসেন বলেন, খেলার মাঠে ধান চাষ করা হয়েছে এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।