জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কানাইপুকুর গ্রামটি এখন পরিচিত পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে। গ্রামটিকে এখন অনেকেই ‘পাখির গ্রাম’ বলে ডাকে। নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে অসংখ্য বিরল প্রজাতির পাখি প্রায় দুই দশক থেকে এখানে বসবাস করছে। প্রতিদিন পাখির কিচিরমিচির শব্দে স্থানীয়দের ঘুম ভাঙে। প্রতিদিন পাখি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে। জানা গেছে, উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের কানাইপুকুর গ্রামের একটি পুকুরের চারপাশে প্রায় পাঁচ বিঘা জমির ওপর বট, পাকুড়, নিম, তেঁতুল, আমসহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে। প্রায় দুই দশক আগে জায়গাটি শামুকখোল পাখির অভয়াশ্রমে পরিণত হয়। এ ছাড়া এখানে রয়েছে বক, কানাবক, শঙ্খচোরা, পানকৌড়ি ও হরিয়াল। তবে শামুকখোল রয়েছে সবচেয়ে বেশি। পাখির কিচিরমিচির ডাক সবসময় মুখরিত করে রাখে গ্রামবাসীকে। তাই তারা পাখিদের সন্তানের মতো লালন করে।
পাখি দেখতে আসা জয়পুরহাট সদরের বাসিন্দা আশিক হোসেন বলেন, ‘শামুকখোল পাখি এখন আর কোথাও দেখা যায় না তেমন। এখানে পাখি কলোনির কথা শুনে দেখতে এসেছি। সরকারের উচিত পাখিগুলো সংরক্ষরণের উদ্যোগ নেওয়া।’ কানাইপুকুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এই পাখিগুলো প্রায় ২০ বছর ধরে বাস করে এখানে। এরা সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত অবস্থান করে। পাখিগুলোকে কেউ কখনো বিরক্ত করে না। এ জন্য এরা এখানে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে বাসা বাঁধতে পারে। আমরা পারিবারিকভাবে পাখির কলোনি দেখাশোনা করি।’ বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মহসিনা বেগম জানান, ‘শামুকখোল পাখি বাংলাদেশে আসে প্রজননের উদ্দেশ্যে। বাচ্চা বড় হয়ে উড়তে শিখলে তারা রাশিয়ার সাইবেরিয়ান অঞ্চলের দিকে চলে যায়। এরা সাধারণত কলোনিয়ালভাবে বাস করে। নিরাপদ আশ্রয় ও পরিমিত খাবার পেলে অনেক দিন থেকে যায়। সরকারের সহযোগিতা পেলে এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।’
ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘পাখি কলোনিটি পরিদর্শন করেছি। চিকিৎসা ও কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমরা সহযোগিতা করব।’