নায়ক সিয়াম আহমেদ ও পূজা চেরী অভিনীত ‘পোড়ামন-২’। ২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পোড়ামন-২’ ছিল জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে নির্মিত, পরিচালনায় রায়হান রাফি। ছবিটিতে টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ সিয়াম আহমেদ প্রথমবার বড়পর্দায় পা রাখেন, জুটি বেঁধেছিলেন নবাগতা পূজা চেরীর সঙ্গে। শুটিং শুরু হয় ২০১৭ সালের শেষের দিকে। মুক্তির পর ‘পোড়ামন-২’ ছিল বছরের সবচেয়ে সফল সিনেমা। নতুন নায়ক সিয়াম ও পূজা চেরী রাতারাতি সুপারস্টার হয়ে যান।
পূজার সঙ্গে প্রথম কাজ সিয়ামের
পূজা তখনো নতুন মুখ। কিন্তু দুজনের রসায়ন এত ভালো জমে যায় যে, দর্শক বিশ্বাসই করেনি এটা তাদের প্রথম জুটি। নির্মাতা রায়হান রাফি বলেন, ‘তাদের অফস্ক্রিন বন্ধুত্বই অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রিতে রূপ নেয়।’
যেভাবে সিয়ামের যুক্ত হওয়া
সিয়াম এই সিনেমায় যুক্ত হওয়া নিয়ে বলেন, ‘বান্দরবানে একটি নাটকের শুটিংয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে একজন ডিওপি আমাকে জানান এই ছবির ব্যাপারে। তবে সেটি প্রাথমিক আলাপ ছিল। আমি ততটা কেয়ার করিনি। পরে ঢাকায় এসে একদিন শুটিংয়ের ফাঁকে পোড়ামন-২ ছবির পরিচালক রায়হান রাফির সঙ্গে আলাপ হয়। আমি তখন ছবির গল্পটা জানতে চাই।’ সিয়াম আরও বলেন, ‘পোড়ামন-২ ছবির গল্প শুনে আমি কেঁদেছি। মনের অজান্তে চোখে পানি চলে আসে। গল্পের ভিত এত মজবুত, যে কারণে আমাকে টেনেছে। আমার চরিত্রের নাম ছিল সুজন শাহ। একেবারে নতুন একটি চরিত্র। চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি সেরাটা দিয়েছি বড় পর্দায় অভিনয় করার জন্য। সেটা সফল করতে পেরেছিলাম মানুষের ভালোবাসা ছিল বলেই। আমি সত্যিই সৌভাগ্যবান।’
পোড়ামন-২ এর শুটিং অভিজ্ঞতা রোমন্থনে সিয়াম
মেহেরপুরে পোড়ামন-২ এর শুটিং অভিজ্ঞতা ছিল সিয়ামের কাছে স্মৃতিময়। তিনি স্মৃতি রোমন্থনে বলেন, ‘সারা বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে ‘পোড়ামন-২’ এর পরিচালক দল অবশেষে তাদের পছন্দের লোকেশন খুঁজে পান মেহেরপুরে-সবুজে ঘেরা এক ছোট্ট গ্রাম, যার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সরু নদী। ছবির গল্পের পরীর জন্য দরকার ছিল একটা পুরোনো দিনের জমিদারবাড়ি। খোঁজ নিয়ে মিলে গেল স্থানীয় এক মেম্বার ইভান ভাইয়ের বাড়ি। পুরোনো এক জমিদারবাড়ি, সামনে বিশাল বারান্দা আর খালি ঘরগুলোতে ধুলো জমে আছে। ইভান ভাইরা এখন ওই বাড়িতে থাকেন না, বাড়ির পেছনে নতুন একটা ঘর তুলে সেখানেই তাদের বসবাস। দল যখন বলল, ‘আমরা আপনার পুরোনো বাড়িটা শুটিংয়ের জন্য নিতে চাই, তিনি হেসে বললেন, ‘ঠিক আছে, নিয়ে নেন। টাকা লাগবে না, শুটিং করুন।’ এমন উদারতা আজকাল বিরল! পুরো বাড়িটা ঘষেমেজে, মেঝে রং করে নতুন সাজে সাজানো হলো। কিন্তু সমস্যা, পুরোনো দিনের আসবাব কোথায় পাওয়া যাবে? এই সময় এগিয়ে এলেন মেহেরপুরের মানুষ। কেউ নিজের খাট, কেউ ঘড়ি, কেউ চেয়ার-টেবিল এনে দিলেন। এ যেন পুরো গ্রাম একসঙ্গে মিলে সিনেমা বানানোর মহোৎসব!
আরও কিছু মজার শুটিং অভিজ্ঞতা
শুটিং শুরু হলে আরও বেশ কিছু মজার ঘটনা ঘটে। সেসব নিয়ে সিয়াম বলেন, ‘শুটিং শুরু হতেই হাজার হাজার মানুষ জড়ো হলো, নায়ক-নায়িকাকে দেখবে বলে। আরেকটা মজার ঘটনা ঘটে, ইভান মেম্বারের দুই ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির সবাইও এসে হাজির! বাড়িতে অতিথি আর দর্শক ভরপুর, অথচ একবারও কেউ ইউনিটের লোকদের বিরক্ত করেননি। বরং যখন কোনো দৃশ্যে ‘অনেক লোক লাগবে’ বলা হতো, মুহূর্তেই মানুষ জড়ো হয়ে যেত ক্যামেরার সামনে।’