এবার স্টুডেন্ট ভিসা থেকে এ্যাসাইলাম চাইলে কঠোর হবে ব্রিটিশ সরকার। কারন গত কয়েক বছরের ডাটা বা পরিসংখ্যান বলছে ব্রিটেনে যতো মানুষ এ্যাসাইলাম চেয়েছেন তাদের ১৩ শতাংশ স্টুডেন্ট। বিশাল সংখ্যক স্টুডেন্ট এ্যাসাইলাম নিলেও এর বেশিপভাগ ছিলো ভিত্তিহীন। স্বরাস্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বলছেন, স্টুডেন্ট হিসাবে পড়তে এসে এ্যাসাইলাম নেওয়া আর মেনে নিবে না সরকার। কেউ অহেতুক এ্যাসাইলাম নিলে তাকে বহিস্কার করা হবে।
হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীকে সরাসরি টেক্সট মেসেজ ও ইমেইলের মাধ্যমে সতর্ক করেছে ব্রিটিশ সরকার। বার্তায় জানানো হয়েছে, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অবৈধভাবে অবস্থান করলে তাদের যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কার করা হবে।
হোম অফিস জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। তারা বৈধভাবে শিক্ষার্থী ভিসায় দেশে প্রবেশ করলেও, ভিসার মেয়াদ শেষ হলে অথবা শেষ হওয়ার আগে আশ্রয় আবেদন করছে। এ কারণে নতুন প্রচারণা চালু করা হয়েছে।
স্বরাস্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বিবিসিকে বলেন, “অনেক শিক্ষার্থী আশ্রয় প্রার্থনা করছে, অথচ তাদের নিজ দেশে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি ।”
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জুন পর্যন্ত এক বছরে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য করা মোট আবেদনের ১৩ শতাংশই এসেছিল শিক্ষার্থী ভিসায় আসা ব্যক্তিদের কাছ থেকে। সংখ্যায় যা প্রায় ১৪ হাজার ৮০০। তবে এর মধ্যে কতজন ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর আবেদন করেছে, তা পৃথকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
সম্প্রতি হোম অফিস ঘোষণা দিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আরও কঠোর নিয়ম মানতে হবে। ভিসা প্রত্যাখ্যান ও কোর্স সম্পন্নের হার নির্দিষ্ট মানে না পৌঁছালে ভবিষ্যতে তারা নতুন ভিসা স্পন্সর করার সুযোগ হারাতে পারে।
সরকার জানিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে ভিসার মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সরাসরি বার্তা পাঠানো হয়েছে। আগামী মাসগুলোতে আরও কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকে এ ধরনের সতর্কবার্তা পাঠানো হবে।
বার্তায় বলা হয়েছে, “যদি আপনি ভিত্তিহীন আশ্রয় আবেদন করেন, তা দ্রুত ও কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করা হবে। আশ্রয় সহায়তা চাইলে দারিদ্র্য প্রমাণের মানদণ্ডে যাচাই করা হবে। মানদণ্ড পূরণ না হলে সহায়তা মিলবে না। যুক্তরাজ্যে বৈধভাবে থাকার অধিকার না থাকলে অবশ্যই দেশ ছাড়তে হবে। না ছাড়লে জোরপূর্বক বহিষ্কার করা হবে।”
কুপার আরও বলেন, অনেক শিক্ষার্থী বছরের পর বছর আশ্রয় প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে যাচ্ছে। এতে আশ্রয়কেন্দ্র ও হোটেলগুলোতে চাপ তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা অবশ্যই প্রকৃত শরণার্থীদের সহায়তা করব, তবে যদি তাদের দেশে কিছুই না বদলায়, তবে শিক্ষার্থী ভিসা শেষে আশ্রয় চাওয়া উচিত নয়।”
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন পর্যন্ত এক বছরে মোট ১ লাখ ১১ হাজার আশ্রয় আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ হাজার ৬০০ জন ছোট নৌকায় চড়ে এসেছে, আর প্রায় সমানসংখ্যক (৪১ হাজার ১০০) বৈধ ভিসা যেমন কাজ, পড়াশোনা বা ভিজিটর ভিসায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে। এদের মধ্যে শিক্ষার্থী ভিসায় আসা ১৪ হাজার ৮০০ জন সবচেয়ে বড় অংশ। যা ২০২০ সালের তুলনায় প্রায় ছয় গুণ বেশি।
যদিও সাম্প্রতিক তথ্যে ১০ শতাংশ হ্রাস দেখা গেছে, তবুও হোম অফিস বলছে এই সংখ্যা আরও কমাতে হবে।
এদিকে, সরকার ঘোষণা দিয়েছে, বিদেশি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে যুক্তরাজ্যে সর্বোচ্চ থাকার সময়সীমা দুই বছর থেকে কমিয়ে ১৮ মাস করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা