ইরানের সাবেক শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভীর কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা সাভাক-এর প্রধান পারভেজ সাবেতি (৮৯) বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের উইন্ডারমেরে একটি বিলাসবহুল এলাকায় বসবাস করছিলেন। তিনি পিটার ছদ্মনামে গত ৪৫ বছর ধরে নিজেকে আড়ালে রেখেছিলেন। সাবেতির বিরুদ্ধে সাবেক তিন রাজনৈতিক বন্দী যুক্তরাষ্ট্রে ২২৫ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ২,৪০০ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ মামলা করেছেন।
সাবেতি শাহের শাসনামলে সাভাক-এর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক ছিলেন এবং দেশজুড়ে বিরোধীদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হত্যা সংক্রান্ত সমস্ত ক্ষমতা তার হাতে ছিল। বাদীপক্ষ অভিযোগ করেছে, সাবেতির নির্দেশে তাঁরা তেহরানের কারাগারে বৈদ্যুতিক শক, পানিতে ডুবিয়ে রাখা, হাত-পায়ের নখ উপড়ে ফেলা এবং ‘অ্যাপোলো’ বৈদ্যুতিক চেয়ারের মাধ্যমে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে মামলার প্রক্রিয়া চলাকালে সাবেতির আইনজীবীরা আবেদন করেছিলেন যে অভিযোগ দায়েরের সময়সীমা পার হয়ে গেছে। তবে ফ্লোরিডার কেন্দ্রীয় ফেডারেল জেলা আদালতের বিচারক গ্রেগরি প্রেসনেল ১২ আগস্ট আংশিকভাবে আবেদন খারিজ করে দেন এবং নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন।
পারভেজ সাবেতি ও তাঁর স্ত্রী নাসরিন (৭৫) ১৯৭৮ সালে ইরান থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং নাম পরিবর্তন করে যথাক্রমে পিটার ও ন্যান্সি রাখেন। ফ্লোরিডার অরেঞ্জ কাউন্টিতে তাদের বিলাসবহুল ম্যানশন ও অন্যান্য সম্পত্তি রয়েছে। পরিচয় ফাঁস হয় ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, যখন সাবেতির মেয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি র্যালিতে বাবার ছবি প্রকাশ করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সারা কোলন বলেন, “আমাদের মক্কেলরা ন্যায়বিচার পাবে। সাবেতি এবং তাঁর সহযোগীরা প্রতিরোধহীন নয়।” এছাড়া ইরানি কালেক্টিভ ফর জাস্টিস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি সংস্থা জানিয়েছে, এই মামলা ইরানে চলমান হিংসার চক্রকে প্রতিহত করবে এবং নির্যাতিত ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক