প্রতি বছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ও আকচা ইউনিয়নের শুক নদীর বুড়ির বাঁধ এলাকায় শুরু হয়েছে মাছ ধরার উৎসব। গতকাল এ উৎসবে যোগ দেন আশপাশের গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে দূরদূরান্ত থেকে আসা মাছ শিকারিরা। জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৯৫১-৫২ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য এলাকায় একটি জলকপাট (স্লইসগেট) নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতি বছর মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। এ পোনাগুলোর দেখভাল করে আকচা ও চিলারং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)। ৫০ একর এলাকাজুড়ে বুড়ির বাঁধ মৎস্য অভয়াশ্রম। সারা বছর কাউকে এখানে মাছ ধরতে দেওয়া হয় না। শুধু জমানো পানি ছেড়ে দেওয়ার পর এ সময়ই মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়।
সারেজমিনে দেখা যায়, হাতে জাল নিয়ে সারি বদ্ধ হয়ে পানিতে নেমেছেন হাজারো মানুষ। কেউ ভেলায়, কেউ ছোট নৌকায় নেমেছেন। চলছে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। গত শুক্রবার বিকালে ছেড়ে দেওয়া হয় বাঁধের পানি। এর পর থেকেই শুরু হয়ে জেলেদের আগমন। উৎসবটি চলে শনিবার দিনব্যাপী। এই উৎসবে যোগ দিয়ে অসংখ্য মানুষ মাছ ধরতে ব্যস্ত। এদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। বাদ যাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল। যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও বসে নেই। খালি হাত দিয়েই কাদার মধ্যে মাছ খুঁজছেন। অনেকে ভিড় জমিয়েছে মাছ ধরা দেখতে। এই উৎসব ঘিরে বাঁধ এলাকায় বসানো হয় বিভিন্ন খাবারের দোকান।
সদর উপজেলার বেগুনবাড়ী থেকে মাছ ধরতে এসেছেন আসলাম, রনি ফারুক তিন বন্ধু। তারা বলেন, প্রতিবারে এখানে মাছ ধরতে আসি আমরা। মাছ ধরতে খুব ভালো লাগে। তবে নদীতে মাছ নাই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী যাকারিয়া বলেন, এই প্রকল্প মাছের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।