অপরিকল্পীত ভাবে আঞ্চলিক মহাসড়কটি নির্মান করায় এভাই পড়ে যাচ্ছে পন্যবাহী ট্রাক। এতে রয়েছে সড়ক বিভাগের গাফলতি।
খুলনা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শরীয়তপুর অংশের ৩৫ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেহাল। এবারের ঈদে ঘরমুখি মানুষের বাড়ি ফিরতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়েত করছেন যাত্রীরা।
বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় সড়কটি বর্তমানে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, ভাঙা সড়কে যানবাহন চালাতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন চালকরা। ১ ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিতে যাত্রীদের ব্যয় করতে হয় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। এরপর জীবনের ঝুঁকিতো থাকছেই। এ সড়কে ৫টি বেইলী সেতু রয়েছে মাঝে মাঝে সেতুগুলি ভেঙ্গে পড়ে। আর মেরামত করতে বছরে যে টাকা খরচ হয় তা দিয়ে আর একটি সেতু নির্মান করা যায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। স্থানিয়রা জানান, রাস্তা আর বেইলি সেতু সংস্কার দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ঠিকাদারি প্রষ্ঠিানসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা। এদিকে সড়কের এই দুর্দশার জন্য অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলকেই দায়ী করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
সড়কে থাকা বড় বড় গর্তে প্রায়ই আটকে যাচ্ছে পণ্যবাহী যনবাহন। আবার অন্য গাড়ীকে সাইড দিতে গিয়ে উল্টে খাদে পরছে অনেক যানবাহন। খুলনা-চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সড়কের শরীয়তপুর অংশের আঙ্গারিয়া থেকে আলুরবজার ফেরীঘাট পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার সড়কে এসব এখন নিয়মিত চিত্র ।
২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে ১৮ কোটি ২১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সড়কটি মেরামত করেছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগ। বছর না ঘুরতেই সড়কজুরে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় ২০১৬ সালের জুন মাসে ৩ কোটি ১৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে সড়কটি মেরামত করা হয়। মেরামতের পর ৩ মাস না পেরুতেই সড়ক জুরে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়।
আবার ২০১৭ জুন মাস এক বছর হয়ে গেলেও কোন কাজ করতে পারেনি সড়ক বিভাগ। তবে ২০১৭ তে সংস্কার কাজের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকার কার্যাদেশ হলেও এখনও কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বেইলি সেতু ভেঙে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহি গাড়ি। আবারও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পরেছে সড়কটি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অনেকে। ভাঙা সড়কে চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পরছে ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীরা।
এই রুটে চলাচলকারী চালক ও মালিক বলেন, চট্টগ্রামের সাথে খুলনা, বরিশাল ও বেনাপোল স্থলবন্দরের দুরত্ব কমাতে বিকল্প সড়ক হিসেবে অধিকাংশ যানবাহনই এই সড়কটি ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এই সড়কে যানবাহন চালাতে গিয়ে নিয়মিত বিড়ম্বনায় পড়তে হয় চালকদের। আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পরিবহন মালিকরা।
চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও বেনাপোল স্থল বন্দরের মাঝে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের সহজ মাধ্যম এই সড়ক। আঞ্চলিক সড়কটি হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য তৈরি করা হলেও প্রতিনিয়িতই অতিরিক্ত পন্য বোঝাই যানবাহন চলাচল করার কারণেই সড়কটি মেরামত করেও টিকানো যাচ্ছেনা বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সমস্যা সমাধানে দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে পার্থ দাস গুপ্ত , সড়ক ও জনপথ বিভাগের, নির্বাহী প্রকৌশলী।
ঈদের আগে সড়ক ও বেইলি সেতু দ্রুত সংস্কার ও মেরামত করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ২টি বন্দরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনকারী আঞ্চলিক সড়কটিকে মহাসড়কে উন্নীত করে যানবাহন চলচলের উপযোগী করা হলে দেশের আমদানী রপ্তানীতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে দাবি স্থানীয়দের।
বিডি প্রতিদিন/১৭ জুন ২০১৭/হিমেল