গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাকে ঝুলছে ফিকে সবুজ রঙের লোভনীয় আঙ্গুর। দিনাজপুরের বাতাসে কমলা, চা চাষের সাফল্যের পর এবার আঙ্গুর চাষে সফলতা এসেছে।
উত্তর জনপদের দিনাজপুরের গাছে থোকা থোকা কমলার পর এবার ঝুলছে মিষ্টি আঙ্গুর। ব্যক্তিগত পর্যায়ে চাষ করে সফলতা এনেছেন দিনাজপুর শহরের আপেল মামুনের স্ত্রী দিনাজপুর সরকারী মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সাদীয়া সুলতানা।
আঙ্গুর ফলের গাছ দেখতে প্রতিদিনই মানুষ আসছেন তার দিনাজপুর শহরের বাড়ী বালুবাড়ীতে। অনেকে পরিকল্পনাও করছেন এই আঙ্গুর চাষ বানিজ্যিকভাবে করা যায় কিনা তা নিয়ে।
এদিকে, ভৌগলিক কারণে হিমালয়ের পাদদেশে দিনাজপুরের অবস্থান হওয়ায় এ এলাকায় আঙ্গুর চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ আঙ্গুরে নেই কোন ফরমালিন, নেই কোন ঝুঁকি। তাই এ অঞ্চলের আঙ্গুর চাষও হতে পারে সর্বাধিক জনপ্রিয় এবং লাভজনক।
এ অঞ্চলে আঙ্গুর আবাদের প্রসার ব্যাপকহারে বাড়লে এ ফল আর আমদানী করতে হবে না। অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ব্যাপক অবদান রাখবে বলে মনে করছেন অনেকে।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর সরকারী মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সাদীয়া সুলতানা জানান, আঙ্গুর গাছ রোপনের আগে গর্ত করে তাতে জৈব সার প্রয়োগ করি। তারপর গাছ রোপন করি। খরা মওসুমে একটু পানি দেই। আঙ্গুর গাছে গোবর সার ও পানি প্রয়োগ করার কারণে বাড়তি কোন সার দেয়নি আর আলাদা ভাবে পরিচর্যা করতেও হয়নি। গত বছরে আঙ্গুর গাছে ফল আসে। গাছের বিস্তৃতি ঘটায় মাচা তৈরি করতে হয়েছে।
তিনি জানান, ২০১৫ সালে এপ্রিলে তার বোন ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ইঞ্জিনিয়ার সুলতানা কবীর এর ঢাকাস্থ বাড়ির ছাদে আঙ্গুর চাষ করেন। সেখান থেকে চারা এনে লাগায়। পরে ২০১৬ সালে এ আঙ্গুর গাছে কিছু ফল আসে। এবারে হাজার হাজার আঙ্গুর ধরেছে। এটা খেতেও মিষ্টি ও সুস্বাদু। থোকা থোকা সুস্বাদু আঙ্গুর ফল খেতে মহল্লার লোকজন এবং আত্মিয়-স্বজনরা প্রতিদিন আসছেন। আঙ্গুর গাছটি পরিচর্যা করতে তাকে সহযোগিতা করেছেন তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবীর ও তার দ্বিতীয় কন্যা প্রভাষক সুফিয়া কবির।
এদিকে, কৃষি বিভাগ জানায়, এটা বরেন্দ্র অঞ্চলের অম্লভাবাপন্ন ও আবহাওয়া বিদ্যমান থাকায় কমলা ও আঙ্গুর চাষ হওয়া সম্ভব। সালফার (গন্ধক) পূর্ণ হলুদার্ভ কাকরযুক্ত লাল মাটির এ অঞ্চলে উৎপাদিত আঙ্গুর মিষ্টি ও রসালো হবে। তবে গাছে নিবির পরিচর্যা, পরিমিত পানি সেচ দিতে যত্নবান হতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/১৭ জুন ২০১৭/হিমেল