চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার চারুলিয়া গ্রামের শাহিন আলী (২২) নামের এক রাখালকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে বিএসএফ।
শনিবার বিকেলে দামুড়হুদার ঠাকুরপুর সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে আহত অবস্থায় সীমান্ত এলাকায় ফেলে রেখে চলে যায়। স্থানীয়রা শাহিনকে উদ্ধার করে শনিবার রাতে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, দামুড়হুদা উপজেলার চারুলিয়া গ্রামের রহিম বক্সের ছেলে শাহিন আলী শনিবার বিকেলে দামুড়হুদার ঠাকুরপুর সীমান্তের ৮৮ নং মেইন পিলারের কাছ দিয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে ঢোকে। ভারতে প্রবেশের পরপরই সে ভারতের ১১৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মালুয়া ক্যাম্পের সদস্যদের হাতে ধরা পড়ে। বিএসএফ সদস্যরা শাহিন আলীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে সীমান্ত এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল জানান, হাসপাতালে ভর্তির সময় তার শারীরিক অবস্থা ছিল বেশ খারাপ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। রবিবার সকালে খবর পেয়ে দামুড়হুদা থানা পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়।
দামুড়হুদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ মোহাম্মদ ফকরুল আলম খান জানান, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের অপরাধে শাহিন আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে থানায় মামলা দায়ের করে তাকে রবিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
দামুড়হুদা আমলী আদালতে জিআরও এস আই রাশেদুল ইসলাম জানান, শাহিন আলীকে দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশী নাগরিককে ধরে শারীরিক নির্যাতন করার প্রতিবাদ জানিয়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানায় বিজিবি। এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে রবিবার বেলা ১২টায় দামুড়হুদার দর্শনা সীমান্তের আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বিজিবি ও বিএসএফ পতাকা বৈঠক করে। ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশি নাগরিক শাহিন আলীর ওপর শারীরিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানায় বিজিবি।
এ ব্যাপারে বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন চুয়াডাঙ্গার ৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মো. রাশিদুল আলম। ভারতের পক্ষে ছিলেন ১১৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী মাহেন্দ্র কুমার।