নাটোরের লালপুর উপজেলার কদিমচিলান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম রেজার বিরুদ্ধে এক মুক্তিযোদ্ধার জমি জবরদখল করে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। সেকেন্দার আলী নামের ওই মুক্তিযোদ্ধা জমিটি ফিরে পেতে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রশাসন ও আদালতের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন।
এলাকাবাসী ও লালপুর সহকারি জজ আদালত সূত্রে জানা যায়, কদিমচিলান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম রেজার চাঁদপুর গ্রামের বাড়ির সামনে (দাগ নম্বর-১৬৮৮) মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলীর ৩৭ শতাংশ ভিটা জমি রয়েছে। পেশায় শিক্ষক এই মুক্তিযোদ্ধা জমিটি পৈত্রিক সূত্রে বাবা গুল মোহম্মদের কাছ থেকে পেয়েছেন।
তাঁর সহোদর ইসকেন্দার মির্জা জমিটি চাষাবাদ করতেন। হটাৎ ২০ এপ্রিল সেলিম রেজার নেতৃত্বে বেশ কিছু লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে ওই জমিটি দখল করে সেখানে ভবন নির্মাণ করতে শুরু করেন। স্থানীয় লোকজন ও ওই মুক্তিযোদ্ধার পরিবার নির্মাণ কাজে বাধা দিলে তাঁদেরকে খুন জখমের হুমকি দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধা এ ব্যাপারে লালপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ করার দীর্ঘদিন পর একজন এএসআই সরেজমিনে গিয়ে জমিটি পরিদর্শন করে আসেন। কিন্তু পুলিশ অদ্যাবধি জমিটি দখলমুক্ত করার কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
অবশেষে ২৭ এপ্রিল সেকেন্দার আলী বাদী হয়ে সেলিম রেজার বিরুদ্ধে লালপুর সহকারি জজ আদালতে মামলা (মামলা নং-৬১/১৭) করেন। শুনানি শেষে আদালত ওই জমিতে স্থিতিবাস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরও প্রতিপক্ষরা বাড়ি নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
সেকেন্দার আলী বলেন,ওই জমির মূল মালিক ছিলেন জনৈক আব্দুর রাজ্জাক সরকার। আমার পিতা গুল মোহম্মদ ১৯৭৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর ৫০০৬ নম্বর এওয়াজ দলিল মূলে তাঁর কাছ থেকে জমিটির মালিক হন। এটা আমার বাবার ব্যক্তিগত সম্পত্তি।
চেয়ারম্যান সেলিম রেজার এই জমির মালিকানা সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র নাই। তিনি আমার চাচাত ভাই হওয়া সত্ত্বেও শুধু ক্ষমতার জোরে জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন। এছাড়াও ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে চাঁদপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো: মকলেছুর রহমানের ১৭ বিঘা জমি দখল করে সে জমি আজ পর্যন্ত চেয়ারম্যান সেলিম রেজা দখলে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সেলিম রেজা জানান,তিনি কদমচিলান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি অন্যায় করে কারও জমি দখল করেননি। নিজের দখলীয় জমিতে ভবন নির্মাণ করছেন। তিনিও পৈত্রিক সূত্রে জমিটি পেয়েছেন বলে দাবি করেন।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ জানান,উভয় পক্ষের মধ্যে ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চালু আছে। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেন তা তাঁদের মেনে নেওয়া উচিত। তিনি এ ব্যাপারে কিছু করতে পারেন না।
বিডি প্রতিদিন/ ১৯ জুন,২০১৭/ ই জাহান