করলা চাষের সফলতায় হাজার হাজার পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এ করলা চাষে নিরব বিপ্লব ঘটিয়েছে খানসামার কয়েকটি গ্রামের কৃষক।
ওইসব গ্রামের মাঠগুলোতে সবুজ ও হলুদের সমারোহ। সবুজ আর হলুদে ভরে উঠেছে খানসামা উপজেলার পূর্ব হাশিমপুর, পশ্চিম হাশিমপুর, আঙ্গারপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া, পূর্ব ডাঙ্গাপাড়া, খামারপাড়া, হোসেনপুর, তেবাড়িয়া, গোবিন্দপুরসহ কয়েকটি গ্রামের করলার ক্ষেতে।
খানসামা এলাকার এসব করলা ক্ষেতে তারা রানীপুকুরি জাতের বীজ বপন করেছে। কমপক্ষে ১০ হাজার কৃষক পরিবার এ করলা চাষ করে হাসি ফুটেছে। অল্প সময়ে বেশি লাভের কারণে করলা চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছেন এসব কৃষক পরিবার। ওইসব করলার ক্ষেত এখন করলার’র গ্রাম হিসেবে পরিচিত।
প্রতিদিন ওইসব গ্রাম থেকে শত শত মণ করলা ট্রাক-টেম্পুযোগে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বগুড়া, রংপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাও, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে। করলাকে কেন্দ্র করে খানসামার পাকেরহাট, বুড়িরবাজার, তেবাড়িয়া, বাহাদুরবাজার, মরিয়মবাজারে প্রতিদিন বিশাল পাইকারী বাজার বসে। স্থানীয়রাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা এখান থেকে করলা ক্রয় করেন।
খানসামা গোবিন্দপুর মধ্যপাড়ার কৃষক ময়েজ উদ্দিন জানান, তার ক্ষেতের করলা ১৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। ১ বিঘা জমিতে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা বিক্রি হতে পারে। এ মূল্যে বিক্রি হলে বিঘা প্রতি ৪০ হাজার টাকা লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আঙ্গারপাড়া গ্রামের মজিবর রহমান জানান, আমি ১০/১২ বছর ধরে করলার চাষ করে আসছি। এবছর আড়াই বিঘা জমিতে করলার চাষ করেছি।
হাশিমপুর গ্রামের করলা চাষি মাজেদ আলী জানান- এবার করলা ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের উৎপাত একেবারে কম, বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কম। তাই কীটনাশক খরচও কম। নিজের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন তা বাজারে বিক্রিও করছি। বেশি ফলনের পাশাপাশি ব্যয়ও অপেক্ষাকৃত কম।
এব্যাপারে খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আফজাল হোসেন জানায়, চলতি মৌসুমে করলা চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার খানসামা উপজেলায় ২ হাজার ৫শ' হেক্টর জমিতে করলার চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১২/১৪ মেট্রিক টন করলা উৎপাদিত হয়েছে। যা বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
বিডি-প্রতিদিন/৭ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল