ঠাকুরগাঁও শহরের ব্যস্ততম বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল করে খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। এতে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল করে (জেলা পরিষদ ডাকবাংলো থেকে প্রাথমিক শিক্ষক ট্রেনিং ইনস্টিটিউট পর্যন্ত) ১৫ থেকে ২০টি দোকান বসেছে। এসবের মধ্যে ১০টি চটপটি ও ফুচকার দোকান; অন্যগুলো কাপড়ের। মূল দোকানটি সড়কের ওপর রেখেই ক্রেতাদের জন্য আসন পেতেছেন সড়কের ওপর। দোকান ঘেঁষে চলছে বাস, ট্রাক, পিকআপসহ নানা যানবাহন। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন খদ্দেররা।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর ঠাকুরগাঁওয়ে সফরের সময় নিরাপত্তার কথা ভেবে মাঠের চারপাশ থেকে দোকানিদের সরিয়ে দিয়ে মাঠের চারপাশ কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। সেসব দোকানিরা এখন শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল দোকান নিয়ে বসেছেন। আর তাতে ভিড় করছেন শহরের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শহরের হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে বিনোদনের কোন ব্যবস্থা নেই। তাই বিকেল হলেই সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড়মাঠে নারী-পুরুষ ও শিশুদের সমাগম বেড়ে যায়। অনেকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমান। শিশুরা নিজেদের মধ্যে ফুটবল-ক্রিকেট খেলে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যান।
ঘোষপাড়া এলাকার আব্দুলাহ হক বলেন, কিছুদিন আগে বড়মাঠে সরিয়ে ছিটিয়ে চটপটি, ফুচকাসহ নানা খাবারের দোকান বসতো। বাড়ি ফেরার আগে লোকজন ওইসব চটপটি ও ফুচকা খেয়ে বাড়ি ফিরতেন। সম্প্রতি বড়মাঠের চারপাশ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে সেসব দোকানিদের মাঠের ভেতর থেকে সরিয়ে দেয় পৌরকর্তৃপক্ষ। এখন দোকানিরা বড়মাঠের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে সড়ক দখল করে দোকান নিয়ে বসেছেন।
শহরের সরকারপাড়ার জোবায়দুর রহমান বলেন, বাচ্চারা সবসময় ব্যস্ত রাস্তার উপর বসে চটপটি-ফুচকা খায়। কখন যে কোন দুর্ঘটনা ঘটে কে জানে।
হাজীপাড়া মহল্লার শাহিন ইসলাম বলেন, শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কটি একটি দুর্ঘটনাপ্রবণ। সম্প্রতি শহরে যেসব বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার বেশিরভাগই ঘটেছে এই সড়কে। এই সড়কের ওপর এভাবে বেঞ্চ পেতে খাবারের দোকান বসানো ঠিক নয়। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
একই এলাকার বাসিন্দা আফরোজা বেগম বলেন, কিছুদিন আগে তিনিসহ তার মেয়ে সড়কের পাশে ফুচকা খেতে গিয়ে একটি ইজিবাইকের ধাক্কায় আহত হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল করে দোকান নিয়ে বসা মো. হাসান বলেন, আমরা পেটের দায়ে এখানে দোকান করছি। মাঠের পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় উপায়ন্তর না পেয়ে ব্যস্ত সড়ক দখল করে দোকান বসিয়েছি। আমাদের দোকান নিয়ে বসার একটা জায়গা করে দিলে আমরা সেখানে চলে যাব।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন বলেন, মাঠের পাশের দোকানদাররা এখন সড়কে দোকান নিয়ে বসেছে। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। দোকানিদের অন্য কোনো জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা