যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শিল্প এলাকা দনবাস ছেড়ে দেয়াসহ অন্তত তিনটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বাকি অন্যতম দুটি শর্ত হলো ইউক্রেন পুশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আকাঙ্ক্ষা ছেড়ে দিতে হবে এবং ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা মোতায়েন করা যাবে না।
ক্রেমলিনের উচ্চপর্যায়ের তিনটি সূত্রের বরাত বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত শুক্রবার আলাস্কায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চার বছরের বেশি সময় পর এটি ছিল প্রথম রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ বৈঠক। তিন ঘণ্টার ওই বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির সম্ভাব্য সমঝোতা নিয়েই আলোচান হয়েছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
বৈঠক শেষে পুতিন বলেন, এই বৈঠক ইউক্রেনে শান্তির পথ উন্মুক্ত করবে বলে আশা করা যায়। তবে বৈঠকে কী কী নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুই নেতার কেউই বিস্তারিত জানাননি। রয়টার্সের প্রতিবেদনে পুতিনের নতুন প্রস্তাবের রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে।
সূত্রগুলো বলছে, ২০২৪ সালের জুনে পুতিন দাবি করেছিলেন- ইউক্রেনের চারটি প্রদেশ পূর্বের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক—যা মিলে দনবাস এবং দক্ষিণের খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া) ছেড়ে দিতে হবে। তবে বর্তমান পুতিন শুধু দনবাস অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চান।
রয়টার্স বলছে, পুতিনের নতুন প্রস্তাবকে আত্মসমর্পণ বলছে কিয়েভ। পুতিনের নতুন শান্তি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে একে তারা ‘আত্মসমর্পণের বলে আখ্যা দিয়েছে।
ক্রেমলিন–সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্র জানায়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার প্রস্তাবে জোর দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনকে দনবাসের যে অংশ এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে, সেখান থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যেতে হবে। এর বিনিময়ে রাশিয়া জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসনের বর্তমান ফ্রন্টলাইন স্থিতিশীল রাখতে রাজি।
মার্কিন তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে রাশিয়া দনবাসের প্রায় ৮৮ শতাংশ এবং জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসনের প্রায় ৭৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়া খারকিভ, সুমি ও দনিপ্রোপেত্রভস্ক অঞ্চলের ছোট ছোট অংশ, যা তাদের দখলে আছে, সেগুলো ফিরিয়ে দিতে প্রস্তুত।
তবে পুতিন তার আগের দাবিগুলোতেও অনড় রয়েছেন যেমন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ছেড়ে দিতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটকে আইনি প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে ন্যাটো আর পূর্বদিকে সম্প্রসারিত হবে না এবং শান্তিরক্ষার নামে ইউক্রেনে কোনো পশ্চিমা সেনা মোতায়েন করা যাবে না।
বিডি-প্রতিদিন/শআ