নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে নিহত বাংলাদেশি জাকারিয়া ভূইয়ার লাশ নরসিংদীর পলাশের জয়পুরা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেছে। সকাল সাড়ে ১১টায় স্থায়ীয় ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের নামাজের জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাদা-দাদির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। নিহত জাকারিয়াকে শেষ বারের মতো দেখতে নিহতের বাড়িতে শত শত লোক ভিড় জাময়।
এসময় শিবপুর আসনের সাংসদ জহিরুল হক ভূইয়া মোহন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা ইয়াসমিন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান ভূইয়া বদিসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানাযায়, সংসারের সচ্ছলতা আনতে প্রায় আড়াই বছর পূর্বে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়ার ইউনিয়নের জয়পুরা গ্রামে আব্দুল বাতেন ভূইয়ার বড় ছেলে জাকারিয়া ভূইয়া নিউজিল্যান্ড পাড়ি জমায়। ক্রাইস্টচার্চে জুমার নামাজ আদায় করতে স্থানীয় মসজিদে গিয়েছিলেন। এসময় বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন জাকারিয়া। লাশ গ্রামের বাড়িতে ফেরার পর হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বাড়ি জুড়ে শুরু হয় শোকের মাতম। স্বামী হারিয়ে প্রায় সঙ্গাহীন অবস্থায় নিহতের স্ত্রী। স্বজনদের আহাজারি আর কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ।
জাকারিয়ার স্ত্রী রীনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমারতো সবই শেষ। স্বামীও শেষ। সংসারও শেষ। বেঁচে থাকার সম্বল শেষ। চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। স্বামীর যেন বেহেশত নসিব হয় সেই জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
নিহতের বাবা আব্দুল বাতেন ভূইয়া বলেন, পৌনে ১১টায় আমারা লাশ বুঝে পেয়েছি। তারপর গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসি। লাশের সাথে কিছু আর্থিক সহয়াতা দেয়া হবে বলে আমাদের নিউজিল্যান্ড থেকে জানিয়েছিল। কিন্তু কিছুই পাইনি।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লাল মিয়া বলেন, পরিবারের সচ্ছলতা আনতে ধার দেনা করে নিউজিল্যান্ড পাড়ি জমায় জাকারিয়া। কিন্তু এভাবে তার মৃত্যু হবে তা জানতাম না। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবারের উপর একটা আর্থিক চাপ পড়ে গেছে। এখন বাংলাদেশ সরকার ও নিউজিল্যান্ডের সরকার পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তা করে পরিবারটিকে বিপদের হাত থেকে যেন বাঁচায়।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা ইয়ামিন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে মরদেহ গ্রহণ করে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও বিধিবিধান অনুযায়ী নিহতের পরিবারকে সকল ধরনের সহায়তা করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা