তোর পোলারে পিডাই মারতেছি শোন, হত্যার আগে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এই কথাগুলো বলা হয়েছিল নিহত রাসেল খানের মা শেফালী বেগমকে। এরপর টিৎকার চেঁচামেচি, গোঙ্গানীর শব্দ। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রাসেল খান(২৫)। এই ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার করদী এলাকায়। নিহত রাসেল করদী এলাকার হাবিব খানের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৮/১০ দিন পূর্বে করদি এলাকার সামসু কাজীর ছেলে রাসেল কাজী সাথে বন্ধু রাসেল খানের মাধ্যে একটি সিম কার্ড নিয়ে কথাকাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। এরই জের ধরে ২৭ মার্চ বুধবার রাত ৮টার দিকে স্থানীয় সনমন্দি বাজার থেকে রাসেলকে ডেকে নিয়ে চার/পাঁচ জন মিলে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এ সময় গুরতর আহত হয় রাসেল খান।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় কর্ত্যবরত চিকিৎসকরা ওইদিন রাতেই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এর পরের দিন দুপুরে ফরিদপুর থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর সোমবার সকালে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় মারা যায় রাসেল। নিহত রাসেলর স্ত্রী’র গর্ভে তিন মাসের সন্তান রয়েছে। রাসেল পেশায় একজন ভ্যানচালক ছিলেন।
রাসেলে মা শেফালী বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মারধরের শব্দ শোনানো হয় আমাকে। আমার ছেলে বাঁচার জন্য অনেক চিৎকার করেছে তবুও ওরে ছাড়েনি। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেরে রেখে যায়। আমার ছেলের বউ গর্ভবতী। অনাগত সন্তান কাকে বাবা ডাকবে? আমি এই হত্যার বিচার চাই।
নিহতের খালাতো ভাই জুয়েল মাতুব্বর বলেন, এভাবে একজন বন্ধুকে আরেকজন বন্ধু হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করতে পারে? আমি এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহিন সরদার বলেন, নিহত রাসেল খানের মাথাসহ সমস্ত শরীরে হতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। এই কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার মাদারীপুর আদালতে অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার