সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় ছেলে সোয়াইবুর রহমানকে (১১) হত্যার দায়ে মা সিতারা বেগমকে (৩৭) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এসময় আদালত সিতারা বেগমের কথিত প্রেমিকও বারিক মিয়াকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
মঙ্গলবার দীর্ঘ শুনানি শেষে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ আদেশ দেন। এছাড়া অপর আসামি সাবুল কিশোর হওয়ায় তার বিচার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে চলছে।
এদিকে আসামি বারিককে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত এবং সিতারা বেগম পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বারিক মিয়া জগন্নাথপুর উপজেলার চিতুলিয়া গ্রামের আলকাছ আলীর ছেলে ও ঘাতক মা সিতারা বেগম একই গ্রামের সৌদি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ্যাড. সোহেল আহমেদ ছইল মিয়া ও জিয়াউল ইসলাম। আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ্যাড. বোরহান উদ্দিন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সিতারা বেগমের প্রবাসী স্বামী রফিকুল ইসলাম প্রায় ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে অবস্থান করেন। এ সুযোগে তার স্ত্রী সিতারা বেগম একই গ্রামের বারিক মিয়ার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৪ সালের ১৪ আক্টোবর সিতারা বেগমকে কথিত প্রেমিক বারিকের সঙ্গে অনৈতিক অবস্থায় দেখে ফেলে সোয়াইবুর। এ ঘটনা তার বাবার কাছে বলে দেবে এমন কথা বললে তার মা বিষয়টি প্রেমিককে জানান।
পরে একই গ্রামের কামাল উদ্দিনের কিশোর ছেলে সাবুল মিয়াকে দিয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় শিশু সোয়াইবুরকে খাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামের হাফিজিয়া মাদ্রাসার কাছে নিয়ে যায়। পরে সোয়াইবুরকে মা ও মায়ের প্রেমিক বারিক মিলে গলা টিপে হত্যা করে মাদ্রাসার টয়লেটের ট্যাংকিতে ফেলে দেয়। স্বজনরা সোয়াইবুরকে না পেয়ে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। একপর্যায়ে মাদ্রাসার টয়লেটের ট্যাংকিতে তার মরদেহ দেখতে পান।
পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পরের দিন ১৫ অক্টোবর সোয়াইবুরের চাচাত ভাই বাদী হয়ে মা সিতারা বেগম, প্রেমিক বারিক ও কিশোর সাবুলকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন