সুন্দরবনে শুরু হয়েছে মধু আহরণ মৌসুম। সুন্দরবনের মধু আহরণের সময় এপ্রিল থেকে তিন মাস। মধু আহরণ মৌসুমের শুরুতেই বনে ছুঁটতে শুরু করেছেন মৌয়ালরা। বাগেরহাটের শরণখোলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌয়ালরা সুন্দরবন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে বনে ঢুকতে শুরু করেছে। কেউ কেউ মধু ভাঙার প্রস্তুতি নিয়ে সুন্দরবনে যাবার অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে, আগের তুলনায় বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে মধুর পরিমান কমে গেছে বলে মৌয়ালরা জানিয়েছেন।
সুন্দরবন বিভাগ জানায়, এবছর মধু আহরণ খাত থেকে গত বছরের চেয়ে প্রায় দেড় গুণ রাজস্ব আয় হবে বলে তার আশা করছেন। সুন্দরবন বিভাগ প্রতি কুইন্টাল আহরিত মধু থেকে ৭৫০ টাকা এবং প্রতি কুইন্টাল মোম থেকে এক হাজার টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করেছে। ১৫ দিনের মধ্যে জনপ্রতি ৫০ কেজির মধু আহরণ করা যায় বলে জানান মৌয়ালরা। গত ৩ দিনে দিনে তিন শতাধিক মৌয়াল সুন্দরবন বিভাগে থেকে অনুমতিপত্র (পাস) নিয়ে বনে ঢুকেছে বলে জানায় বন বিভাগ।
বুধবার বিকালে সুন্দরবন সন্নিহিত খুঁড়িয়াখালী গ্রামের মধু আহরণকারী জামাল ফরাজী, হারুন ফরাজী, মজিদ ফরাজী, এমাদুল তালুকদার, শাহজাহান আকন, শরণখোলা গ্রামের রতন মোল্লা, আসাদুল কবিরাজ, ইউসুফ মাতুব্বর, বাদল হাওলাদার জানান, বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বনে এখন আর আগের মতো মধু পাওয়া যায়না। এখন সুন্দরবনে গরান ও খলসী ফুলের মৌসুম। মধু আহরণ মৌসুমের শেষের দিকে আসবে কেওড়া গাছে ফুল। সুন্দরবনে গরান ও খলসী এই দুই জাতের গাছের সংখ্যা ধীরে-ধীরে কমে যাচ্ছে। যার ফলে মধুর উৎপাদনও কম হচ্ছে। তাদের মধু আহরণর করতে বনের গহীনে ঝোঁপ-ঝাড়ে প্রবেশ করতে হয়। এতে জীবনের ঝুঁকি থকে অনেক। রয়েল বেঙ্গল টাইগার, কিং কোবারাসহ বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ, কুমির ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণির কাছে নিজের জীবন বাজি রেখে তাদের মধু আহরণ করতে হয়।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক ও শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ১ এপ্রিল মধু আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে। ৩ মাস ধরে সুন্দরবনে চলবে শুধু সংগ্রহ।
এ বছর শরণখোলা রেঞ্জে মধু আহরণ খাত থেকে ৬ লাখ টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। সুন্দরবন বিভাগের পক্ষ থেকে এ বছর মৌয়ালদের নিরাপত্তাসহ সব ধরণের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার