করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটরগুলো প্রায় সাড়ে ৪ মাস ধরে বন্ধ থাকায় কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন। জানা গেছে, কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে জ্বলেনা কোন বাতি। বর-কনের আসনটি ফাঁকা। জন্মদিন বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানেরও নেই কোন কোলাহল।
১৯ মার্চ করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সমাগম এড়াতে সারাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করে সরকার। এরই অংশ হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সকল ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেয় স্থানীয় প্রশাসন। এরপর থেকে কমিউনিটি সেন্টারগুলো বন্ধ হয়ে যাবার পর দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বেকার হয়ে পড়ায় বাধ্য হয়ে অনেকেই তাদের পেশা বদল করে ফেলেছে।
জেলা শহরের স্বপ্নিল কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারে ধুলোবালি, বর-কনের বসার স্থানটি ধুলোর আস্তরণ পড়ে গেছে। হাড়িপাতিল খালি পড়ে আছে। যারা এ সেন্টারের দায়িত্বে ছিলেন তারা এখন বেকার হয়ে সময় পার করছেন। এ সেন্টারের মালিক সঞ্জয় কুমার বলেন, প্রতি মাসে সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ভালই হতো এবং সে আয় থেকে কর্মচারীদের বেতন দেয়া হতো।
বর্তমানে যারা দায়িত্ব আছেন তাদের বেতন দেয়া দুস্কর হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ ৪ মাস ধরে কর্মাচারীদের বেতন ও সেন্টারের ভাড়া দেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। করোনায় তাদের সবকিছু এলোমেলা হয়ে গেছে। বিকল্প আয় হিসেবে নিজস্ব বাবুর্চি দিয়ে স্বপ্নিল রান্নাঘর নামে রান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যারা অর্ডার দিচ্ছেন সে খাবারগুলো হোম ডেলিভারির মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এতে করে যা আয় হবে তা কর্মচারীসহ ভাড়া চালানো সম্ভব হবে। এ মুহুর্তে কোন বিকল্প না পাওয়ায় এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ দিকে ৪ মাস ধরে বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় ডেকোরেটরগুলোর ব্যবসাও শুন্যের কোঠায় নেমেছে। তাদের এখন দুঃসময় যাচ্ছে। বড় বড় হাড়িপাতিল খালি পড়ে আছে। কর্মচারীদের কাজ না থাকায় কেউ কেউ পেশা বদল করে ফেলেছে। শহরের ফিরোজ ডেকোরেটরের স্বত্বাধিকারী মো. ফিরোজ হোসেন জানান, গত ৪ মাস ধরে করোনায় সকল ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত তিনি। অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখাতো দূরের কথা, নিজেদের টিকে থাকাটায় এখন কষ্টকর।
এছাড়া রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও থামিয়ে দিয়েছে এই করোনা। ফলে ডেকোরেটরের মালামালগুলো গোডাউনে নষ্ট হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। একই রকম অবস্থা দেখা দিয়েছে সাউন্ড সিষ্টেমের দোকানগুলোতে। তাদের সরঞ্জামাদিও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। শহরের প্রামাণিক মাইক হাউসের মালিক শাহজাহান প্রামাণিক জানান, করোনা সংকটে সকল অনুষ্ঠান বন্ধ রাখায় সাউন্ড সিষ্টেমগুলো প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি সরকারি প্রণোদনা আশা করছেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন