দরিদ্র মানুষ যাতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে ব্যবহার করতে পারে এজন্য তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল পানির ট্যাংক। এসব পানির ট্যাংক উপকারভোগীদের ঘরের পাশে স্থাপন করে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে। তবে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলায় দরিদ্র মানুষের জন্য এসব পানির ট্যাংক স্থাপন নিয়ে উঠেছে নানা অভিযোগ।
অভিযোগ আছে, সরকারি কর্মকর্তারা অর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য নিজেরাই জড়িয়েছে ঠিকাদারদের সাথে। এরপর আবার সুবিধাভোগী পরিবারকে সামান্য কিছু অর্থ হাতে ধরিয়ে দিয়ে তাদের বসিয়ে নিতে বলা হয়েছে এসব ট্যাংক। এ অর্থ ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
জানা যায়, সমুদ্র উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরের সবচেয়ে ছোট উপজেলা ইন্দুরকানী। এ উপজেলাটি সমুদ্রের সবচেয়ে কাছে হওয়ায় লবণাক্ততা এখানকার একটি বড় সমস্যা। এছাড়া এ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করতে না পারায় এখানে সুপেয় পানির একটি বড় উৎস বৃষ্টির পানি। তাই ‘সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’ এর আওতায় এ উপজেলায় ৩১২ টি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ট্যাংক বরাদ্দ দেওয়া হয় যার প্রতিটির ধারণ ক্ষমতা তিন হাজার লিটার। এসব ট্যাংক স্থাপনের জন্য রহমত ট্রের্ডাস, মহিউদ্দিন আহমেদ ট্রেডার্সসহ মোট তিনটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কার্যাদেশে সময়সীমা দেওয়া ছিল এ বছরের ৩০জুন পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি কার্যক্রম। অভিযোগ আছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্থানীয় কয়েকজন যুবলীগ নেতা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সরকারি কর্মকর্তারা এ ট্যাংক স্থাপনের কাজ করছে। ইন্দুরকানী উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শিমুল বড়ালের নামটি উঠে এসেছ বেশি।
কার্যাদেশ অনুযায়ী পানির ট্যাংক স্থাপনের পুরো দায়িত্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের থাকলেও সুবিধাভোগীদের ট্যাংক স্থাপনের প্লাটফর্ম তৈরির জন্য চার হাজার টাকা নগদ প্রদান করে ইন্দুরকানী উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের লোকজন। এছাড়া পানির ট্যাংকগুলো উপজেলা থেকে নিজেদের খরচে নেওয়ার জন্যও তাদের বাধ্য করে। তবে প্রতিটি ট্যাংক স্থাপনের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪২,০০০ টাকা। এর মধ্যে একটি ট্যাংকের দাম ২২ হাজার টাকা। বাকি টাকা ট্যাংক স্থাপনের মজুরি ও ভ্যাট-ট্যাক্স খরচ। সরকারি অফিসের লোকজনের এমন আচরণে ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় সুবিধাভোগীদের মাঝে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের ইন্দুরকানী উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী শিমুল বড়ালের দাবি, ‘ঠিকাদারই পানির ট্যাংকগুলো স্থাপন করেছে’।
পিরোজপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আ: আলীম গাজী জানান, ‘প্রকৌশলীর দায়িত্ব কাজের দেখভাল করা। ঠিকাদারি কাজে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নাই’।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা