মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ রাঙামাটি লংগদু উপজেলার তবলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘ বছরে ধরে অযত্ন অবহেলায় এখন একেবারে জরাজীর্ণ। বিদ্যালয়ের গায়ে রঙ উঠেছে বহু বছর আগে। দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল, ভেঙে পড়ছে ছাদ। খসে পড়ছে দেওয়ালের প্লাস্টার। সামান্য বৃষ্টিতে ভেসে পানিতে ভেসে যায় ক্লাস রুম। কিন্তু তবুও থেমে নেই পাঠদান। ঝুঁকি যেনেও দূর পাহাড়ি পথ বেয়ে বিদ্যালয়ে আসে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। সরকারিভাবে কোন সাহায্য সহায়তা না পেলে তবুও শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রেখেছে শিক্ষকরা। বিদ্যালয়েল ভাঙা ভবনের পাশেই দৌচালা টিনের একটি ঘরে দেওয়া হয় পাঠদান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটি লংগদু উপজেলার ৭নং ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের রাঙাপানি ছড়ার তবলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৬৫ সালে এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হলেও সংষ্কার হয়নি একবারও। তাই দীর্ঘ বছরের অযত্ন অবহেলায় বিদ্যালয়ের এখন বেহাল দশা। ২০১৯ সালে খবর পেয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে এসে অতিঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এলজিডি। সে সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিদ্যালয়ের ভবনের পাশে বাঁশ আর টিন দিয়ে নির্মাণ করে একটি দৌচালা ঘর সে ঘরে চলে পাঠদান।
এ ব্যাপারে লংগদু ৭ নং ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি দীর্ঘায়ু চাকমা বলেন, বিদ্যালয় সত্যি অবহেলিত। তিন বছর অতিবাহিত হলেও এ বিদ্যালয় সংস্কারের তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
তবলছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্মৃতি বিকাশ চাকমা বলেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে একবারও মেরামত করা হয়নি। তাই বিদ্যালয়টি এখন অতিঝুঁকিপূর্ণ। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র জরাজীর্ণ। এ বিদ্যালয়ে প্রায় ১০০জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সবাই পড়ায় আগ্রহী। কিন্তু বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় পাঠদানেও নানা প্রতিকূলতার মোকাবেলা করতে হয়। বিদ্যালয়ের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। কিন্তু এখনো মেলেনি বরাদ্দ তাই শুরু হয়নি কাজ।
রাঙামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক এবং এলাকার ইউপি সদস্যও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়েছি। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী (পিইডিপি-৪) এর আওতায় সকল বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মিত হবে। যেহেতু প্রকল্পটি চলমান রয়েছে আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয় নির্মিত কাজ শুরু হবে।
অন্যদিকে, রাঙামাটি জেলায় প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ জেলা পরিষদের অধিনে হস্তান্তরিত বিভাগ হলেও তবলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেলাদশার কথা অবগত নয় বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি জানতামনা লংগদু উপজেলার তবলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়টি ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে পড়া-লেখা করছে। এ বিষয়টি এখনো পর্যন্ত কেউ আমাকে জানায়নি। জেলা পরিষদ যেকোন বিদ্যালয় উন্নয়নে কাজ করছে। ওই বিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধান করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন