চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন ঘিরে জমে উঠেছে প্রার্থীদের প্রচার। বুধবার ইশতেহারে ছাত্রদল মনোনীত প্যানেল আট দফা ও ছাত্রশিবির ৩৩ দফা ঘোষণা করে। এর মধ্যে ছাত্রদলের ইশতেহারে আশার আলো দেখছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, ছাত্রদলের ইশতেহারে ক্যারিয়ার গঠনে দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি নারী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এসব বাস্তবায়িত হলে ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে থাকবে ছাত্রদল। ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তাঁরা সংকট বোঝার চেষ্টা করেছেন। এর ভিত্তিতে ইশতেহারে আট দফা যুক্ত করা হয়েছে। ইশতেহারে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে শিক্ষা ও গবেষণাকে। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচিত হলে অনলাইন স্টুডেন্ট পোর্টাল চালু, ম্যাটল্যাব স্থাপন এবং গবেষণার সফটওয়্যার ব্যবহারের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারকে আধুনিকায়ন, প্রতিটি হলে পাঠকক্ষ ও গ্রন্থাগারের ব্যবস্থা করা হবে।
ইশতেহার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য পোশাকের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ, আবাসিক হলে ভর্তুকিতে স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও সাইকোলজিক্যাল কাউন্সিলর নিয়োগের উদ্যোগ, মেডিকেল সেন্টারে নারী ডাক্তার ও নার্সের উপস্থিতি নিশ্চিতসহ বিশেষ মেডিকেল কর্নার স্থাপন, হলের কাছে ফার্মেসি ও সুপারশপ স্থাপন, একটি জিমনেসিয়াম ও ইনডোর গেমিং স্পেস নির্মাণের উদ্যোগ এবং মসজিদে নারী শিক্ষার্থীদের নামাজ আদায়ের জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা গ্রহণের কথা ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে। শামসুন্নাহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তা যেন কাগজেই সীমাবদ্ধ না হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা অনুষদের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান নয়ন বলেন, ছাত্রদল যেমন কাজ করতে পারবে হয়তো তেমনই ইশতেহার তৈরি করেছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের তা খুবই পছন্দ হয়েছে। এ ছাড়াও ইশতেহারে চবিকে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ, শিক্ষার্থীদের ওপর সংঘটিত গুপ্ত হামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক রিপোর্ট প্রকাশ ও বিচার নিশ্চিতকরণের জন্য কার্যকর উদ্যোগ, মেডিকেল সেন্টারে একটি ব্লাড ব্যাংক স্থাপন, ‘জিরো প্লাস্টিক’ নীতিতে পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগ, বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চাকে উৎসাহিত করা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য ভাতা বৃদ্ধি, ব্রেইল বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি রয়েছে।