নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০২৫ ঘোষণা করার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে আলোচনা-শোরগোল। অনেকেই বলছেন, এবারও ট্রাম্পের কপালে জুটল হতাশা। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেই নিজেকে এই পুরস্কারের সবচেয়ে যোগ্য দাবিদার হিসেবে দাবি করে ট্রাম্প। তবে নোবেল কমিটি তার এতো জোরালো দাবিও আমলে নিলো না। শান্তিতে নোবেল পেলেন ভেলেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা মাচাদো।
মাচাদো ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও একনায়কতন্ত্র থেকে শান্তিপূর্ণ উত্তরণের জন্য অক্লান্ত প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে এই সম্মান পেয়েছেন বলে জানিয়েছে নোবেল কমিটি। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি তাকে অন্ধকারের মধ্যে গণতন্ত্রের শিখা জ্বালিয়ে রাখা এক সাহসী ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ শান্তির চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
এদিকে, এই ঘোষণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য নিঃসন্দেহে একটি অস্বস্তিকর দিন। গত কয়েক মাস ধরে তিনি বারবার দাবি করে এসেছেন যে, তিনি বিশ্বের সাতটি যুদ্ধ থামিয়ে বৈশ্বিক শান্তি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাই নোবেল পুরস্কার তাঁরই প্রাপ্য।
পুরস্কার ঘোষণার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেও হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্টের পক্ষে জোর প্রচার চালানো হয়। একটি ছবিতে ট্রাম্পকে স্যুট পরে হোয়াইট হাউসের করিডোর দিয়ে হেঁটে যেতে দেখা যায়। যার ক্যাপশনে লেখা ছিল শান্তির প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, তাঁর ওভাল অফিস থেকেই বিশ্বজুড়ে সমস্ত শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শেষ করার জন্য তিনি আলোচনা শুরু করেছেন বলেও জানান। যদিও সেই সংঘাতগুলির কোনো চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। এছাড়াও, গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্বও দাবি করেন ট্রাম্প। নিজেকে আধুনিক যুগের বুদ্ধ হিসেবে তুলে ধরার কোনো সুযোগই ট্রাম্প ছাড়েননি।
এর আগে চারজন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন থিওডোর রুজভেল্ট (১৯০৬), উড্রো উইলসন (১৯১৯) এবং জিমি কার্টার (২০০২)। বারাক ওবামা তাঁর প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রথম বছরেই ২০০৯ সালে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও আন্তর্জাতিক কূটনীতি জোরদার করার প্রচেষ্টার জন্য এই পুরস্কার পান।
পুরস্কার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প ওবামাকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ওবামা কিছুই না করে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন... তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন, আর তাকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল শুধু আমাদের দেশকে ধ্বংস করার জন্য।
নোবেল কমিটি ট্রাম্পকে এড়িয়ে যাওয়ায় তিনি এখনও কোনো মন্তব্য করেননি। তবে আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে, খুব শীঘ্রই তার কাছ থেকে একটি ক্ষোভপূর্ণ বক্তব্য আসতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল