বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা, এক ঘণ্টা থমকে ছিল পুরো সিলেট। সবার আন্দোলন মিলেছিল এক মোহনায়। পরিবহন শ্রমিকরা ছিলেন কর্মবিরতিতে, ব্যবসায়ীরা বন্ধ রাখেন দোকানপাট। ছাত্র-শিক্ষকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ নেমে আসেন রাস্তায়। পালিত হয় এক ঘণ্টার প্রতীকী অনশন। কোর্ট পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ সমাবেশ। এ আন্দোলন ছিল উন্নয়ন বঞ্চনার প্রতিবাদে। গতকাল সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ডাকে পালিত হয় এই কর্মসূচি। সমাবেশ থেকে সমস্যা সমাধানে সময় বেঁধে দেওয়া হয় ১৫ দিন।
প্রতিবাদ সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। মূল বক্তব্যে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, মৌলিক অধিকার থেকে সিলেটবাসী বঞ্চিত। সিলেটের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ খাতের ন্যায্য এবং প্রাপ্যতা আজও নিশ্চিত হয়নি। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সত্ত্বেও সিলেটবাসী বৈষম্যের শিকার। এসব আর সহ্য করা হবে না। আমরা ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিচ্ছি, এর মধ্যে সিলেটের মূল সমস্যাগুলো সমাধান না করা হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
আন্দোলনের দাবিগুলোর মধ্যে ছিল- সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের সংস্কারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, সিলেট-ঢাকা ও সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে নতুন ট্রেন-বগি যুক্ত করা, রেল টিকিটের কালোবাজারি বন্ধ করা, সিলেট-ঢাকা রুটে বিমানের ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে আনা এবং সিলেটের অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়ন ও টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করে বাস্তবায়ন। সমাবেশ শেষে আরিফুল হকের নেতৃত্বে সিলেট জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলমের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, যেসব সমস্যার কথা বলা হয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত। গত ৫-৭ বছর যোগাযোগ খাতে তেমন কোনো কাজ হয়নি, এজন্য মহাসড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো বেহাল। আমি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আরও বলেন, সকাল-বিকাল অভ্যন্তরীণ বিমানের ভাড়ার তারতম্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে শিগগির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। পাশাপাশি সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দুর্ভোগ লাঘবে অন্তত একটি বিশেষ ট্রেন চালু করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।