মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে হ্যান্ডপরিয়ে এক রাজমিস্ত্রিকে অপহরণের অভিযোগে ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবলসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে অপহরণে ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল, হ্যান্ডকাপ ও স্প্রিংয়ের লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার সকালে তাদেরকে মুন্সিগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে শ্রীনগর ও ঢাকার দোহার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল তায়েবীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ফুলকুচি এলাকা থেকে মো. সুজন (২০) এক রাজমিস্ত্রিকে পুলিশ পরিচয়ে ৬ যুবক মিলে তুলে নেয়। এ ঘটনায় আরিফ মির্জাসহ আরও একজন পলাতক রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, শ্রীনগর উপজেলার উত্তর কামারগাও গ্রামের আক্তার খানের ছেলে ফয়সাল খান (২৩), দামলা গ্রামের শেখ খলিলের ছেলে আরিফ হোসেন (২০), মাহি শেখের ছেলে মুজিবুর রহমান শাফিন ও ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল লিয়াকত হোসেন লিমন (২৫) ।
লিয়াকত হোসেন মুন্সিগঞ্জের টংগিবাড়ী থানার কুন্ডেরবাজার ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল হিসাবে কর্মরত রয়েছেন।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ব্রাহ্মণপাইকসা এলাকার রাজমিস্ত্রি সুজনকে বৃহস্পতিবার রাতে ফুলকচি এলাকার হৃদয় মার্কেটের সামনে কোমলপানীয় পান করার সময় দুইটি মোটরসাইকেলে করে কনস্টেবল লিয়াকতসহ ৬ যুবক এসে তার কাছে মাদক আছে বলে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নিয়ে যায়। পরে তাকে রাঢ়ীখাল এলাকার নির্জন স্থানে এবং বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের ছনবাড়ি ফ্লাইওভারের নিচে এনে বাড়ি থেকে মুক্তিপণ এনে দিতে বলা হয়। এ সময় সুজন অপারগতা প্রকাশ করলে অপহরণকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বেদম মারধর করে। রাত ৯ টার দিকে সুজনের মায়ের কাছে ফোন দিয়ে ত্রিশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
সুজনের মা আনোয়ারা বেগম তাৎক্ষণিক স্থানীয়দের পরামর্শে বিষয়টি শ্রীনগর থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশের পরামর্শে আনোয়ারা বেগম টাকা নেওয়ার জন্য অপহরণকারীদের সমষপুর এলাকায় তাদের বাড়ির সামনে আসতে বলেন। বেশ কয়েকবার তালবাহানা করে রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি অ্যাপাচি মোটরসাইকেল নিয়ে টাকা নিতে পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণপাইকসা মসজিদের সামনে আসলে পূর্ব থেকে উপস্থিত থাকা শ্রীনগর থানা পুলিশ ফয়সাল খান, আরিফ হোসেন ও মাহি শাফিনকে আটক করে। পরে পুলিশ তাদেরকে সাথে নিয়ে রাত ছনবাড়ি এলাকায় আসলে লিয়াকত হোসেন লিমন ও আরিফ মির্জাসহ অজ্ঞাত আরও একজন পালিয়ে যায়।
পরে শুক্রবার দিনব্যাপী অভিযান নামে পুলিশ। এদিন বিকালে দোহার ও শ্রীনগর থানা পুলিশ দোহার উপজেলার নিকরা গ্রামে একটি বিল্ডিং থেকে লিয়াকত হোসেন লিমনকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিপি লেখা হ্যান্ড কাপ, স্প্রিংয়ের লাঠি ও অপহরণের কাজে ব্যবহৃত ইয়ামাহা এফজেড মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। লিমন ওই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে।
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার আসলাম খান জানান, এ ঘটনায় শ্রীনগর থানায় অপহরণ মামলা হয়েছে। ৪ জনকে গ্রেফতার করে মুন্সিগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতে কনস্টেবল লিয়াকতের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল